Home » অলিগোপলি বাজার কাকে বলে ও অলিগোপলি বাজারের বৈশিষ্ট্য সমূহ

অলিগোপলি বাজার কাকে বলে ও অলিগোপলি বাজারের বৈশিষ্ট্য সমূহ

by Rezaul Karim
অলিগোপলি বাজার কাকে বলে, অলিগোপলি বাজারের বৈশিষ্ট্য,

অলিগোপলি বাজার

ইংরেজি Oligopoly শব্দটি Oligos এবং Polis শব্দ দুটির সমন্বয়ে গঠিত। গ্রিক শব্দ Oligos এবং Polis-এর অর্থ যথাক্রমে মুষ্টিমেয় ও বিক্রেতা। অর্থাৎ সামষ্টিকভাবে Oligopoly শব্দের অর্থ মুষ্টিমেয় বিক্রেতা। যে বাজারে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বা বিক্রেতার সংখ্যা দুইয়ের অধিক তবে সংখ্যা অল্প হয়, তাকে অলিগোপলি বা মুষ্টিমেয় বিক্রেতার বাজার বলা হয়। অল্প বলতে উৎপাদক বা বিক্রেতার সংখ্যা দুইয়ের বেশি হবে। যেমন- লৌহ ও ইস্পাত শিল্প, মোটরগাড়ি শিল্প, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, কম্পিউটার শিল্প অলিগোপলি বাজারের উদাহরণ।

অর্থনীতিবিদ হেন্ডারসন (Henderson) ও কোয়ান্ট (Quandt) বলেন, “একটি অলিগোপলি শিল্প পর্যাপ্ত পরিমাণে স্বল্পসংখ্যক বিক্রেতা ধারণ করে যেখানে একক বিক্রেতার কাজ অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলে।” (An oligoplistic industry contains a number sufficiently small so that the actions of any individual seller have a perceplible influence upon his rivals.)

একচেটিয়া বাজার কাকে বলে ও একচেটিয়া বাজারের বৈশিষ্ট্য

আমেরিকান অর্থনীতিবিদ উইলিয়াম ফেলনার (William Fellner) এরূপ বাজারকে ‘স্বল্পের মধ্যে প্রতিযোগিতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। মোবাইল ফোন কোম্পানি, ঢেউটিন, ইস্পাত, মোটরগাড়ি, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি উৎপন্ন দ্রব্যের ক্ষেত্রে এ বাজার পরিলক্ষিত হয়।

অলিগোপলি বাজারের বৈশিষ্ট্যসমূহ

অলিগোপলি বাজারে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহ রয়েছে-

১. স্বল্পসংখ্যক বিক্রেতা: অলিগোপলিতে বিক্রেতার সংখ্যা স্বল্প হয়। স্বল্প বলতে বিক্রেতার সংখ্যা দুইয়ের বেশি হবে। অলিগোপলিকে মুষ্টিমেয় বিক্রেতার বাজারও বলে।

২. সিদ্ধান্ত গ্রহণে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা: অলিগোপলিতে বিক্রেতার সংখ্যা স্বল্প হওয়ায় তাদের মধ্যে কোনো একজন দাম ও উৎপাদনের পরিবর্তন করলে প্রতিযোগী অন্যান্য বিক্রেতা পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট হয়। কাজেই একজন বিক্রেতা উৎপাদন ও দাম পরিবর্তন করতে চাইলে অন্যান্য প্রতিযোগীর বিষয়টি চিন্তাভাবনা করতে হয়।

৩. প্রচারের গুরুত্ব: অলিগোপলিতে একজন বিক্রেতা অপর বিক্রেতার সাথে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়। অন্য ক্রেতাকে কীভাবে নিজের দিকে আকৃষ্ট করা যায় সে ব্যবস্থার জন্য প্রচার ও বিজ্ঞাপনের জন্য আশ্রয় নেওয়া স্বাভাবিক।

৪. প্রবেশে বাধা: অলিগোপলি বাজারে প্রযুক্তিগত বাধা থাকে। তাই এ বাজারে নতুন ফার্মের বাজারে প্রবেশ করে উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ কঠিন হয়।

৫. অনমনীয় দাম: অলিগোপলি বাজারে চাহিদা রেখা বা গড় আয় রেখা কৌণিক আকৃতির হয়। ফলে দামের পরিবর্তনের তুলনায় চাহিদার পরিমাণ ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। তাই ফার্মগুলো দাম পরিবর্তন করতে চাই না বলে অনমনীয় দামব্যবস্থা বিরাজ করে।

পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ar=mr হয় কেন ? – ব্যাখ্যা কর

৬. দলীয় মনোভাব: অলিগোপলিতে একক স্বার্থের ঊর্ধ্বে অনেক সময় দলীয় স্বার্থও বিবেচনা করা হয়। কয়েকটি ফার্মকে দলবদ্ধ হয়ে উৎপাদন কাজ পরিচালনা করতে দেখা যায়।

৭. চাহিদা রেখার অনিশ্চিত প্রকৃতি: অলিগোপলিতে বিক্রেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকায় একজনের পরিবর্তিত দামে অন্যের ওপর কী প্রতিক্রিয়া হবে তা বলা যায় না। যেমন একটি ফার্মের দাম প্রতিযোগী ফার্ম দাম কমাবে নাকি, অপরিবর্তিত রাখবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। এক্ষেত্রে চাহিদা রেখার আকৃতি অনিশ্চিত হয়।

Related Posts