Home » ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর

ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর

by Rezaul Karim
ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তা

ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব

মানবজাতির অতীত কার্যাবলির ধারাবাহিক ও সময়ানুক্রমিক লিখিত বিবরণ হল ইতিহাস। ইতিহাসকে মানুষের অতীত কর্মকাণ্ডের (Actions of human beings that have been done in the past) ভাণ্ডার বলে অভিহিত করা যায়। ভাণ্ডার থেকে যেমন প্রয়োজন অনুসারে অর্থসম্পদ আনয়ন করা যায়, ঠিক তেমনি ইতিহাস নামক অতীতের ভাণ্ডার থেকে আমরা অতীতের যেকোন দেশের, যেকোন জাতির কর্মকাণ্ড ও উত্থান-পতনের খতিয়ান পেয়ে থাকি। সমকালীন প্রেক্ষাপটে ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বর্তমান অধ্যায়ে ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হল-

১. অতীতের দর্পণ

ইতিহাসকে অতীতের দর্পণ হিসেবে অভিহিত করা যায়। দর্পণের দিকে তাকালে যেমন স্বীয় প্রতিবিম্ব স্পষ্টভাবে অবলোকন করা যায়, তেমনিভাবে ইতিহাসের দিকে তাকালে অতীতের সকল জাতিগোষ্ঠীর বিবর্তন সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। তাছাড়া অতীতের দর্পণ ইতিহাস হতেই অতীতের সকল জাতির সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় জীবন সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়।

২. সভ্যতার সোপান

মানুষের অতীত কর্মের খতিয়ান ইতিহাসকে সভ্যতার সোপান বলে গণ্য করা যায়। সভ্যতার সোপান হিসেবে এটি আদি গুহাবাসী মানবের জীবন ব্যবস্থা অর্থাৎ প্রাচীন যুগের মানুষের জীবন ব্যবস্থা, মধ্যযুগের মানুষের জীবন ব্যবস্থা ও আধুনিক যুগের মানুষের জীবন ব্যবস্থার মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে। এটি প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনসমূহ মধ্যযুগের মানুষের নিকট উপস্থাপন করে এবং মধ্যযুগের সভ্যতার নিদর্শনসমূহ আধুনিক যুগের মানুষের দ্বার প্রান্তে এনে দেয়। এভাবে ইতিহাস সকল যুগের সকল মানুষের মধ্যকার যোগসূত্রের সোপান হিসেবে কাজ করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।

৩. ইতিবৃত্তের সংরক্ষক

যে বিষয়টি ইতিবৃত্তের সংরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে তা হল ইতিহাস। এটি সকল সভ্যতার ক্রমবিবর্তন, সকল জাতির উত্থান বিকাশ ও পতন এবং সকল রাজা-বাদশার যাবতীয় কর্মের বিবরণ সংরক্ষণ করে। উল্লেখ্য, এ সকল সংরক্ষিত ইতিবৃত্তের কল্যাণকর দিকগুলো বর্তমান প্রজন্মকে সঠিক পথের দিকনির্দেশনা দেয়ার ক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৪. বর্তমানকে জানার জন্য ইতিহাসের প্রয়োজনীয়তা

ইতিহাস অতীতের ঘটনা হলেও এটি মৃত নয় বরং জীবিত। ইতিহাস জীবিত অতীত হিসেবে বর্তমানের মধ্যে বেঁচে থাকে। তাই বর্তমানকে যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে হলে প্রথমে অতীতকে জানা দরকার। কারণ বর্তমানের ভিত প্রোথিত আছে সেই সুদূর অতীতে। সুতরাং বর্তমানকে ভালভাবে জানা ও বুঝার জন্যই অতীত অর্থাৎ ইতিহাসকে জানতে হবে। কাজেই বর্তমানকে জানার জন্য ইতিহাসের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

৫. সামাজিক স্থিতিশীলতায় ইতিহাস

একটি দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নয়নের জন্য সামাজিক স্থিতিশীলতা অত্যন্ত জরুরি। ইতিহাসের পাতায় স্থান পাওয়া অগণিত সমাজের মধ্যে কোন্ সমাজ কেন অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছিল এবং কেনইবা একটি সমাজের অধঃপতন হয়েছে তার নীরব সাক্ষী হল ইতিহাস। সুতরাং সমাজকে স্থিতিশীল রাখার প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ইতিহাস থেকে নিয়ে বর্তমান সমাজকে স্থিতিশীল রাখার জন্য ইতিহাসের শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৬. রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রয়োজনে ইতিহাস

রাজনৈতিক ইতিহাস অতীতের রাজা-বাদশা, তাঁদের কার্যকলাপ ও প্রশাসনিক কর্মের অতীত বিবরণ। কোন্ শাসক কোন্ পদ্ধতি অবলম্বন করে রাষ্ট্রে রাজনৈতিক ভারসাম্য ও প্রশাসনিক উৎকর্ষ সাধন করতে সক্ষম হন এবং কোন্ অবস্থার প্রেক্ষাপটে একটি রাষ্ট্রে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক অব্যবস্থার সৃষ্টি হয় তা আমরা ইতিহাস থেকে জানতে পারি। রাজনৈতিক উন্নয়ন, গণতান্ত্রিক কর্মের বিকাশ সাধন ও প্রশাসনিক সংস্কারের শিক্ষা আমরা ইতিহাস থেকে পেয়ে থাকি। ইতিহাস থেকে যথাযথভাবে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শিক্ষা গ্রহণ করে বর্তমান সমাজের রাজনৈতিক উন্নয়ন ও প্রশাসনিক সংস্কারের স্বার্থেই ইতিহাস পাঠ অত্যাবশ্যক।

৭. অর্থনৈতিক প্রয়োজনে ইতিহাস

রাজনৈতিক বিবরণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়াদিও ইতিহাসে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করছে। আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রাম (১৭৭৬), ফরাসি বিপ্লব (১৭৮৯), রুশ বিপ্লব (১৯১৭) ও বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের পেছনে যে সকল কারণ নিহিত তন্মধ্যে অর্থনৈতিক কারণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে গণঅসন্তোষের সৃষ্টি হয় তা যেমন ইতিহাস থেকে জানা যায়, তেমনি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কোন নীতি গ্রহণের ফলে রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধিত হয় তাও ইতিহাস থেকে জানা যায়। অতএব, ইতিহাস থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা রক্ষা করা সম্ভব।

৮. ধর্মীয় সহনশীলতায় ইতিহাস

রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ের ন্যায় অতীতের ধর্মীয় বিষয়ও ইতিহাসের উপজীব্য। মধ্যযুগে ধর্মীয় ক্ষেত্রে পোপ ও যাজকদের দুর্নীতি, ধর্মকে কেন্দ্র করে খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যকার ক্রুসেড, ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্টদের মধ্যকার ত্রিশবর্ষব্যাপী যুদ্ধ (১৬১৮–১৬৪৮) প্রভৃতির খতিয়ান হচ্ছে ইতিহাস। উপর্যুক্ত ঘটনা হতে ইতিহাস আমাদেরকে ধর্মীয় বিষয়ে সহনশীল হতে দিকনির্দেশনা দেয়।

৯. সাংস্কৃতিক উন্নয়নে ইতিহাস

আজকের সংস্কৃতি বিগত দিনের সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠেছে। সাংস্কৃতিক ইতিহাস হতে আমরা সংস্কৃতির ক্রমবিবর্তন সম্পর্কে জানতে পারি। ইতিহাসই আমাদের সামনে বিগত উন্নত সংস্কৃতির চিত্র তুলে ধরে। আজকের উন্নত সংস্কৃতির মূলে রয়েছে বিগত দিনের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের অবদান। সাংস্কৃতিক ইতিহাস হতে দীক্ষা গ্রহণ করে সাংস্কৃতিক উন্নয়নের লক্ষে ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

১০. অতীতকে বাঁচিয়ে রাখে ইতিহাস

ইতিহাস মানেই অতীতের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় প্রভৃতি দিকের বিবরণ। ইতিহাস অতীতের ঐ সকল বিষয় স্বীয় ভাণ্ডারে সংরক্ষণ করে আমাদের সামনে তুলে ধরে। ইতিহাস আছে বলেই অতীতের মানব জীবনের কার্যাবলি বর্তমানে আলোচিত হয় এবং অতীতের কার্যাবলি বর্তমানে আলোচিত হওয়ার মধ্যদিয়েই অতীত বর্তমানের মধ্যে বেঁচে থাকে। ইতিহাস না থাকলে অতীতের ঘটনাবলি মৃত হয়ে যেত অর্থাৎ স্মৃতির পাতা থেকে ক্রমশ বিলীন হয়ে যেত। সেজন্য বলা যায়, ইতিহাস মৃত অতীত নয় বরং জীবিত অতীত। অতীত সমাজ ও সভ্যতা সম্পর্কে জানা এবং অতীতকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ইতিহাসের বিকল্প নেই।

১১. ইতিহাস জাতীয়তাবোধ সুসংহত করে

ইতিহাস বিভিন্ন দেশ ও জাতির জাতীয়তাবোধের বিবরণ সংরক্ষণ করে। কাজেই বঞ্চিত, অবহেলিত ও শোষিত জনগোষ্ঠী ইতিহাস হতে জাতীয়তাবোধের শিক্ষা গ্রহণ করে উদ্দীপিত হয় এবং শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে অনুপ্রাণিত হয়। যেমন- স্পেনের বিরুদ্ধে ওলন্দাজদের জাতীয়তাবাদী ও স্বাধীনতা সংগ্রাম, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আয়ারল্যান্ডের জনগণের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আমেরিকার উপনিবেশবাসীদের জাতীয়তাবাদী ও স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমাদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অনুপ্রেরণার মূলে ভূমিকা পালন করে ইতিহাস। ইতিহাস হতে এ সকল জাতীয়তাবাদী আন্দোলন সম্পর্কে জানার ফলে বর্তমান ও আগামী প্রজন্ম ক্রমশ জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠতে পারে। সুতরাং জাতীয়তাবাদী চেতনা শক্তিশালী ও কার্যকর করার ক্ষেত্রে ইতিহাসের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

১২. আত্মোপলব্ধিতে ইতিহাস

ইতিহাস মানুষের আত্মোপলব্ধির চাবিকাঠি। মানুষের স্বীয় প্রকৃতি জানা এবং স্বীয় প্রকৃতি জানার অর্থ হল মানুষ কী করতে সক্ষম সে বিষয়ে সম্যক জ্ঞান লাভ করা। আর তা জানার একমাত্র উপায় হল মানুষের অতীত কার্যক্রমের সাথে পরিচিত হওয়া। শুধু ইতিহাস পাঠের মাধ্যমে তা জানা সম্ভব। মানুষ যা করেছে, আজ এবং আগামীতেও মানুষ তা করতে পারে। ইতিহাস সকলের মনে এরূপ দৃঢ় প্রত্যয়ের জন্ম দেয়। মানুষ কী করতে পারে বা মানুষের দ্বারা কী করা সম্ভব এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে ইতিহাস কাজেই আত্মোপলব্ধি এবং মানুষের মধ্যে দৃঢ় প্রত্যয় সৃষ্টি করতে পারে ইতিহাস।

১৩. জ্ঞানের বিকাশসাধন

আমাদের জ্ঞানভাণ্ডারে জ্ঞান সঞ্চিত হয় জ্ঞানরাজ্যের বিভিন্ন শাখা থেকে। জ্ঞানরাজ্যের বিষয়সমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় কলেবর বিষয় হল ইতিহাস। এতে সভ্যতার উত্থান-পতন, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, বিভিন্ন সংস্কার, আন্দোলন, বিপ্লব, বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী প্রভৃতি লিপিবদ্ধ থাকে। কাজেই যথাযথভাবে ইতিহাস অধ্যয়ন করলে জ্ঞানরাজ্যের বহুকিছু হৃদয়ঙ্গম করা যায়। এভাবে ইতিহাস জ্ঞানবুদ্ধির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

১৪. প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে সতর্ক থাকতে শিক্ষা দেয়া

কালের সাক্ষী ইতিহাসে বর্ণিত আছে- ছিয়াত্তরের ভয়াবহ মন্বন্তর (১১৭৬ বঙ্গাব্দ, ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দ), ১৯৪৩-এর দুর্ভিক্ষ, ১৯৭০-এর প্রলয়ংকরী জলোচ্ছ্বাস, ১৯৮৮-এর প্লাবনসহ নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা। মূলত অনাবৃষ্টি ও মজুতকরণ নীতির ফলেই যে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর এবং ১৯৪৩-এর দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় সে তথ্য ইতিহাসে বর্ণিত আছে। এ সকল প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে পরবর্তীকালে অনেক গবেষণাকর্ম সম্পাদিত হয় এবং সে সকল গবেষণায় খ্যাতনামা গবেষকগণ দুর্যোগ প্রতিরোধের উপায় বর্ণনা করেন। সুতরাং এরূপ দুর্যোগের সময় কেমন সতর্কতা অবলম্বন করলে জানমালের ক্ষতি বহুলাংশে এড়ানো যায় সে বিষয়গুলো ইতিহাসে বর্ণিত আছে। সেজন্য বলা যায়, ইতিহাস অনাবৃষ্টিতে সম্ভাব্য করণীয় বিষয় এবং দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ নেয়া উচিত সে সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিয়ে হাজার হাজার লোকের প্রাণ রক্ষা করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

১৫. পররাষ্ট্রনীতির দিকনির্দেশনায় ইতিহাস

বিশ্বের সকল দেশের ইতিবাচক, নেতিবাচক, আক্রমণাত্মক ও বন্ধুত্বমূলকসহ সকল প্রকার পররাষ্ট্রনীতির বিস্তারিত বিবরণ হল ইতিহাস। বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্র নীতি এবং এক রাষ্ট্রের সাথে অপর রাষ্ট্রের যাবতীয় সম্পর্কের বিষয়ও ইতিহাস হতে জানা যায়। কাজেই পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান লাভ করতে হলে ইতিহাস অধ্যয়ন করা একান্ত আবশ্যক। ইতিহাস হতে পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান লাভ করে সার্থক পররাষ্ট্রনীতির বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

১৬. অনুপ্রেরণায় ইতিহাস

উত্থান, ক্রমবিকাশ ও পতন জগতের চিরন্তন নিয়ম। আজ যে জাতি শৌর্যবীর্যের সাথে পৃথিবীতে অত্যন্ত খ্যাতিমান অবস্থায় আছে, একদিন হয়ত সে জাতির অবস্থা সকল দিক হতে অতি শোচনীয় হয়ে পড়বে। আবার এক সময়কার অতি শক্তিশালী ও সম্পদশালী রাষ্ট্র হয়ত আজ ক্ষয়িষ্ণু অবস্থায় বিরাজমান। বর্তমানের ক্ষয়িষ্ণু জাতি ইতিহাসের আয়নায় তাকিয়ে তার গৌরবময় অতীত সম্পর্কে জেনে নিজেদেরকে পুনর্গঠন করে নেয়ার শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। অতএব, ক্ষয়িষ্ণু জাতিকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে ইতিহাসের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে পর্যালোচনার ক্ষেত্রে বলা যায়, আদি মানব সমাজ, সভ্যতার ক্রমবিবর্তন, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় প্রভৃতি দিক সম্পর্কে জানার জন্য ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ইতিহাসের গুরুত্ব প্রসঙ্গে J. E Swain বলেন, “History has an important role to play in the development of civilization. Any careful observer is impressed with the extent to which events of today are rooted in the past. If all our knowledge of past experience were to disappear, probably nine-tenths of the inhabitants of large cities would die with a month, and those surviving would soon return to a primitive stage.” একইভাবে ইতিহাসের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল বলেন, “If you look longer back, you can look further ahead”.

সম্পর্কিত আর্টিকেল

ইতিহাস শব্দের উৎপত্তি এবং ইতিহাসের সংজ্ঞা দাও

ইতিহাসের বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা কর

ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য সমূহ কি কি? – আলোচনা কর

Related Posts