ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের মধ্যে পার্থক্য
ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব পারস্পরিক সম্পর্কসূত্রে আবদ্ধ হলেও উভয়েই এক এবং অভিন্ন নয়। উভয়ের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। নিম্নে ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের মধ্যে পার্থক্য গুলো আলোচনা করা হলো-
প্রথমত, মানবসমাজ বিকাশের কোন একটি স্তরে ক্ষমতার উদ্ভব হয়। অন্যদিকে, কর্তৃত্বের উদ্ভব হয় ক্ষমতা ও বৈধতার একত্রিত উপস্থিতির ভিত্তিতে।
দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক ক্ষমতার সাথে শক্তি প্রয়োগের উপাদান ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত। অন্যদিকে, শক্তি প্রয়োগের উপাদানের সাথে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব সম্পর্কহীন।
তৃতীয়ত, ক্ষমতার সাথে শক্তি প্রয়োগের সম্পর্ক থাকায় এটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। অপরপক্ষে, কর্তৃত্বের সাথে বৈধতার সম্পর্ক থাকায় এটি স্থায়ী রূপ লাভ করতে পারে।
আরও দেখুন: কর্তৃত্ব কত প্রকার ও কি কি | কর্তৃত্বের প্রকারভেদ
চতুর্থত, কর্তৃত্বকে বাদ দিয়ে ক্ষমতার অবস্থিতি সম্ভব। অন্যদিকে, ক্ষমতাকে বাদ দিয়ে কর্তৃত্বের অবস্থিতি সম্ভব নয়।
পঞ্চমত, ক্ষমতা বৈধ এবং অবৈধ উভয়ই হতে পারে। অন্যদিকে, কর্তৃত্ব হচ্ছে শুধু বৈধ ক্ষমতা।
ষষ্ঠত, অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষমতা জনগণ দ্বারা স্বীকৃত হয় না কিংবা জনগণের আনুগত্য কম তাকে। অন্যদিকে, কর্তৃত্ব জনগণ দ্বারা স্বীকৃত। কর্তৃত্বের সাথে বৈধতার সম্পর্ক আছে বিধায় তা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য। সপ্তমত, ক্ষমতাকে কর্তৃত্বে পরিণত করা যায়। অন্যদিকে, কর্তৃত্বকে ক্ষমতায় পরিণত করা যায় না।
অষ্টমত, কর্তৃত্ব হলো একটি ব্যাপকতর ধারণা। অন্যদিকে, ক্ষমতা হলো কর্তৃত্বের একটি উপাদান মাত্র।
নবমত, ক্ষমতার পিছনে বৈধতার প্রশ্নটি জড়িত নয় বলে তা বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না। অন্যদিকে, কর্তৃত্বের সাথে বৈধতার প্রশ্নটি জড়িত আছে বিধায় তা টিকে থাকে।
আরও দেখুন: কর্তৃত্ব কত প্রকার ও কি কি | কর্তৃত্বের প্রকারভেদ
ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের মধ্যে উপর্যুক্ত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও একথা বলা যায় যে, উভয়ই পারস্পরিক সম্পর্কসূত্রে আবদ্ধ। কেননা ক্ষমতা ছাড়া কর্তৃত্ব যেমন হয় না, তেমনি কর্তৃত্ব ছাড়া ক্ষমতা অর্থহীন। বস্তুত কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।