Home » নারী নির্যাতনের প্রভাব আলোচনা কর

নারী নির্যাতনের প্রভাব আলোচনা কর

by Rezaul Karim
নারী নির্যাতনের প্রভাব আলোচনা কর

নারী নির্যাতনের প্রভাব

বাংলাদেশে নারী নির্যাতন যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে শুধু সমাজে নারীদের নিরাপত্তাই বিঘ্নিত হচ্ছে না, বরং সামাজিক সংহতি এবং পারিবারিক সৌহার্দ্যও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নিচে নারী নির্যাতনের প্রভাব বা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার বিশেষ বিশেষ দিকগুলো আলোচনা করা হলো:

ক. পারিবারিক সংহতির প্রতি হুমকি

নারী নির্যাতন বা স্বামী কর্তৃক স্ত্রী নির্যাতন ও মানসিক নিপীড়নের ফলে পারিবারিক অশান্তি দেখা দেয়। সমাজের মৌলিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিবার যথাযথ ভূমিকা পালনে সক্ষম হচ্ছে না।

খ. কিশোর অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি

স্বামী কর্তৃক স্ত্রী নির্যাতন, হত্যা, বিবাহবিচ্ছেদ, দাম্পত্য কলহ প্রভৃতির ফলে পারিবারিক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এতে শিশু কিশোরদের সুষ্ঠু সামাজিকীকরণ ব্যাহত হয়। এর ফলে ছেলে-মেয়েদের অপরাধপ্রবণ ও বিপথগামী হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করে।

নারী নির্যাতন কি? নারী নির্যাতনের ৫টি কারণ আলোচনা কর

গ. আত্মহত্যা প্রবণতা বৃদ্ধি

নারী নির্যাতনের বিশেষ দিক হচ্ছে মানসিক নিপীড়ন। তার পরিণতিতে বিপুল সংখ্যক মহিলা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। আত্মহত্যাকারীর মধ্যে শতকরা ৭০ জনই হলো গৃহবধূ। বেশিরভাগ আত্মহত্যার কারণ হচ্ছে দাম্পত্য কলহ এবং নারী নিপীড়ন।

ঘ. পতিতা এবং সামাজিক পঙ্গুত্বের হার বৃদ্ধি

নারী নির্যাতনের বিশেষ দিক হচ্ছে জোরপূর্বক ধর্ষণ, নারী অপহরণ, বিদেশে পাচার এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োগ। আমাদের সমাজব্যবস্থা এবং সামাজিক মূল্যবোধের প্রেক্ষিতে নারী নির্যাতনের এরূপ শিকার মহিলাদের সমাজ ও পরিবার সহজভাবে গ্রহণ করে না। ফলে তারা সামাজিক পঙ্গুতে পরিণত হতে বাধ্য হয়ে অসামাজিক কাজে নিজেদের নিয়োজিত করে। এছাড়া হাজার হাজার পাচারকৃত মহিলা আন্তর্জাতিক চক্রের নানা প্ররোচনার শিকার হয়ে পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত হতে বাধ্য হচ্ছে।

ঙ. নারীসমাজের নিরাপত্তাহীনতা

বাংলাদেশে যে হারে নারী নির্যাতন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সমাজে মহিলাদের নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

চ. বিবাহ সমস্যা এবং বিবাহবিচ্ছেদ

নারী নির্যাতনের বিশেষ কারণ হচ্ছে যৌতুক। যৌতুক প্রথার প্রভাবে একদিকে যেমন কুমারী মেয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে বিবাহবিচ্ছেদের হার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ছ. দৈহিক পঙ্গুর হার বৃদ্ধি

এসিড নিক্ষেপের ফলে গুরুতরভাবে দগ্ধ ও আহত মহিলারা দৈহিকভাবে পঙ্গুত্ববরণ করে দুর্বিষহ জীবনযাপনে বাধ্য হয়। এতে সমাজে দৈহিক পঙ্গুত্বের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষাপটে বলা যায়, নারী নির্যাতনের প্রভাব যেমন ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে তেমনি পারিবারিক ও সামাজিক পর্যায়ে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করছে।

Related Posts