Home » ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?

ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?

by Rezaul Karim
ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য

ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য সমূহ

ব্যক্তিত্ব হলো মানুষের মনোভাব, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, দৃষ্টিভঙ্গি, আবেগ-অভিজ্ঞতা, প্রেরণা এবং তার দৈহিক আকৃতি ও রূপের যৌগিক মিশ্রণ। এ সকল বৈশিষ্ট্য এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে পৃথক হয়। যেমন- কোন ব্যক্তির কথাবার্তা, আচার-ব্যবহার, চালচলন, মেজাজমর্জি, প্রকাশভঙ্গি প্রভৃতি যদি আমাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে মনের উপর রেখাপাত করে তাহলে তার সম্পর্কে আমরা বলি যে,
লোকটির ব্যক্তিত্ব আছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে ব্যক্তিত্ব হলো ব্যক্তি মানুষের সকল বৈশিষ্ট্যের একক ও অনন্য প্রকাশ। ব্যক্তিত্বের সংজ্ঞা ও প্রকৃতি (Nature) বিশ্লেষণ করলে এর কতিপয় বৈশিষ্ট্যের সন্ধান পাওয়া যায়। নিম্নে ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য গুলো বর্ণনা করা হলো:

প্রথমত, ব্যক্তি তার জন্মলগ্নে অনন্ত সম্ভাবনা এবং বিচিত্র শক্তি নিয়ে এ পৃথিবীতে আসে। ব্যক্তির মধ্যে সুপ্ত থাকা সেই সম্ভাবনা এবং শক্তিকে বাস্তবে রূপায়িত করার জন্য ব্যক্তির এক দৈহিক মানসিক সংগঠন আছে। জন্মের পর থেকেই পরিবেশের বিভিন্ন শক্তি ব্যক্তির উপর ক্রিয়া করে এবং এর ফলে ব্যক্তির অন্তর্নিহিত শক্তি, সহজাত প্রবৃত্তি ও প্রবণতা এবং পরিবেশের শক্তির মধ্যে যে পারস্পরিক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়, তার থেকেই ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশ লাভ করে। কাজেই পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে উপযোজনের (Adaptation) জন্য ব্যক্তির কার্যাবলি তার ব্যক্তিত্বের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।

ব্যক্তিত্ব কি বা কাকে বলে? ব্যক্তিত্বের সংজ্ঞা দাও

দ্বিতীয়ত, ব্যক্তির সঙ্গে পারিপার্শ্বিক অবস্থার উপযোজনের পিছনে আছে ব্যক্তির চিন্তা, অনুভূতি, ইচ্ছা, ভাবধারা, কামনা, বাসনা, জীবনাদর্শ এবং ব্যক্তির সহজাত প্রবণতা ও বৃত্তি।

তৃতীয়ত, ব্যক্তিত্ব হলো ব্যক্তির দেহ-মনের এক জীবন্ত ঐক্য।

চতুর্থত, ব্যক্তিত্বের মানসিক এবং দৈহিক বৈশিষ্ট্যগুলো মিলে একটি সুসামঞ্জস্য রূপ লাভ করে। তাই বলা যায়, ব্যক্তিত্বের মধ্যে রয়েছে একটা সমগ্রতা, একটা সংহতি, একটা সুসামঞ্জস্য সংগঠন।

পঞ্চমত, প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে ব্যক্তির সংগতি সাধনের প্রচেষ্টার জন্য ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের মধ্যেও পরিবর্তন দেখা যায়। তাই বলা যায়, ব্যক্তিত্ব স্থির বা নিশ্চল নয়, সদা পরিবর্তনশীল, বিকাশমান এবং গতিময়।

ষষ্ঠত, যে আত্মসচেতন জীব নিজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতন এবং নিজেকে নিয়ন্ত্রিত করতে সক্ষম, তিনিই ব্যক্তি। সুতরাং আত্মসচেতনতার (Self- consciousness) এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের (Self-determination) ক্ষমতাই ব্যক্তিত্বের মূল ভিত্তি।

সপ্তমত, ব্যক্তিত্ব পরিবর্তনশীল এবং বিকাশমান হলেও এর মধ্যে একটা স্থায়িত্ব আছে, যার মাধ্যমে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব প্রকাশিত হয়। ব্যক্তিত্বের এ বৈশিষ্ট্যের জন্য বলা যায় যে, প্রতিটি ব্যক্তি এক বিশেষ ব্যক্তি এবং এ হিসেবে সে অদ্বিতীয়, অন্য কারো সাথে তার তুলনা হয় না।

অষ্টমত, ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব আত্মপ্রকাশ করে সামাজিক পরিবেশের মধ্যে। সমাজের আচার-ব্যবহার, রীতিনীতি, সংস্কৃতি ও ভাবধারা প্রভৃতি সামাজিক উপাদান ব্যক্তিত্ব সৃষ্টি করে। তাই বলা যায়, ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব সমাজের উপর নির্ভরশীল।

Related Posts