Home » মোট উৎপাদন, গড় উৎপাদন, প্রান্তিক উৎপাদন ও উৎপাদন বিধি ধারণা

মোট উৎপাদন, গড় উৎপাদন, প্রান্তিক উৎপাদন ও উৎপাদন বিধি ধারণা

by Rezaul Karim
মোট উৎপাদন কাকে বলে, গড় উৎপাদন কাকে বলে, উৎপাদন বিধি কি,

উৎপাদন সম্পর্কিত যেসব গুরুত্বপূর্ণ ধারণা রয়েছে সেগুলোর মধ্যে মোট উৎপাদন, গড় উৎপাদন ও প্রান্তিক উৎপাদন অন্যতম।

মোট উৎপাদন (TP)

উৎপাদন ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো উপকরণের বিভিন্ন একক নিয়োগ করে যে বস্তুগত উৎপাদন সৃষ্টি হয়, তার সমষ্টিকে মোট উৎপাদন বলে।

ধরা যাক, উৎপাদন অপেক্ষক Q = F(L, K) এখানে L (শ্রম) উপকরণটি পরিবর্তনীয় উপকরণ। এক্ষেত্রে শ্রমের (L) বিভিন্ন একক ব্যবহার করে যে বিভিন্ন পরিমাণ উৎপাদন (Q) পাওয়া যায় তার সমষ্টিই মোট উৎপাদন। ধরা যায় ১ম, ২য় ও ৩য় একক শ্রম ব্যবহার করে 12, 10 ও ৪ একক উৎপাদন পাওয়া যায়। তাহলে মোট উৎপাদন হবে TP = 12+10+8 = 30 একক।

গড় উৎপাদন (AP)

উৎপাদন ক্ষেত্রের বিভিন্ন একক থেকে প্রাপ্ত উৎপাদনের সমষ্টি হলো মোট্ উৎপাদন বলা হয়। আর এ মোট উৎপাদনকে মোট নিয়োগকৃত উপকরণের পরিমাণ দ্বারা ভাগ করলে যা পাওয়া যায় তাকে গড় উৎপাদন (AP) বলে। যদি উৎপাদন অপেক্ষক Q = ƒ(L) হয়, তাহলে গড় উৎপাদন AP = TP/L হবে।

আরও পড়ুন

উৎপাদন অপেক্ষক কি | স্বল্পকালীন ও দীর্ঘকালীন উৎপাদন অপেক্ষক কি

উদাহরণ হিসেবে 3 একক শ্রম নিয়োগ করে মোট উৎপাদন 30 একক হলে,

TP = 30, L = 3

AP = 30/3 = 10 একক।

প্রান্তিক উৎপাদন (MP)

উৎপাদন ক্ষেত্রে কোনো উপকরণ অতিরিক্ত এক একক পরিবর্তন করলে মোট্ উৎপাদন যতটুকু পরিবর্তন হয় তাকে প্রান্তিক উৎপাদন বলে। এক্ষেত্রে প্রান্তিক উৎপাদন পরিমাপের সূত্রটি হলো- MP = ΔQ/ΔL ধরি, শ্রম ও একক থেকে বৃদ্ধি করে 4 একক হলে উৎপাদন 30 একক থেকে বেড়ে 36 একক হলে প্রান্তিক উৎপাদন হবে

MP = (36-30)/(4-3) = 6 একক

উৎপাদন বিধি

কোনো দ্রব্য উৎপাদনে উৎপাদনের উপকরণসমূহ (ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন) প্রয়োজন হয়। এসব উপকরণ হ্রাস-বৃদ্ধি করে উৎপাদনের পরিমাণ কমানো বা বাড়ানো যায়। উৎপাদক যদি উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতে চায় তবে উপকরণ বাড়বে, আবার যদি উৎপাদনের পরিমাণ কমাতে চায় তবে উৎপাদন কমাবে। এভাবে উপকরণ বাড়ালে বা কমালে উৎপাদনের বাড়া বা কমার হার সবসময় একরকম হয় না। অর্থাৎ উপকরণ যে হারে পরিবর্তন করা হয় উৎপাদন কখনো সেই হারে আবার কখনো তার থেকে কম হারে আবার কখনোবা তার থেকে বেশি হারে পরিবর্তন হয়। আর এরূপ পরিবর্তন কেমন হচ্ছে তা যে বিধির সাহায্যে জানা যায় বা পরিমাপ করা যায় তাকে উৎপাদন বিধি বা Law of Production বলা হয়। উৎপাদন বিধি প্রকৃতপক্ষে উপকরণ ব্যয়ের প্রেক্ষিতে উৎপাদনের পরিবর্তনের হার প্রকাশ করে।

আরও পড়ুন

যোগানের নির্ধারক সমূহ কি কি?

ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ এ. কুটসোয়ানিস (A. Koutsoyiannis) এর মতে, “উৎপাদন স্তর বৃদ্ধির সম্ভাব্য কারিগরি প্রক্রিয়াকে উৎপাদন বিধি বলে।” উৎপাদন বিধিকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১. ক্রমবর্ধমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধি,

২. সমানুপাতিক বা স্থির প্রান্তিক উৎপাদন বিধি ও

৪৩. ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক উৎপাদন বিধি।

Related Posts