Home » শ্রমের গতিশীলতা কি | শ্রমের গতিশীলতা কত প্রকার ও কি কি

শ্রমের গতিশীলতা কি | শ্রমের গতিশীলতা কত প্রকার ও কি কি

by Rezaul Karim
শ্রমের গতিশীলতা কি, শ্রমের গতিশীলতা কত প্রকার,

শ্রমের গতিশীলতা কি

সাধারণত শ্রমের গতিশীলতা বলতে শ্রমিকের স্থানান্তরকে বোঝায়। শ্রমিক তার প্রয়োজনে তার পেশা, কর্মস্থল বা স্তরের পরিবর্তন করতে পারে। তাই এক্ষেত্রে শ্রমের গতিশীলতা বলতে শ্রমিকের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে, এক পেশা থেকে অন্য পেশায়, এক স্তর থেকে অন্য স্তরে এবং এক শিল্প থেকে অন্য শিল্পে স্থানান্তরকে বোঝায়। যেমন- কোনো শ্রমিক চাঁদপুর থেকে ঢাকায় কাজ করার উদ্দেশ্য আসল, অথবা কৃষি শিল্প থেকে পোশাক শিল্পে, অথবা একই শিল্পে পদোন্নতি পেল ইত্যাদি শ্রমের গতিশীলতা।

শ্রমের গতিশীলতার প্রকারভেদ

শ্রমের গতিশীলতা প্রধানত চার প্রকার হতে পারে। যথা-

১. ভৌগোলিক গতিশীলতা,

২. পেশাগত গতিশীলতা,

৩. শিল্পগত গতিশীলতা ও

৪. স্তরগত গতিশীলতা।

১. ভৌগোলিক গতিশীলতা (Geographical Mobility)

শ্রমিক তার কাজের উদ্দেশ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বা এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থানান্তর হওয়াকে ভৌগোলিক গতিশীলতা বলা হয়। যেমন- ঢাকার কোনো মাছ বিক্রেতা খুলনায় গিয়ে মাছ বিক্রয় করে।

শ্রম কি | শ্রম বাজার কি | শ্রমের দক্ষতা কি

ভৌগোলিক গতিশীলতা দুই ধরনের। যথা-

ক. অভ্যন্তরীণ গতিশীলতা ও খ. আন্তর্জাতিক গতিশীলতা।

ক. অভ্যন্তরীণ গতিশীলতা: দেশের অভ্যন্তরে একই পেশায় বা শিল্পে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গিয়ে কাজ করাকে অভ্যন্তরীণ গতিশীলতা বলে। যেমন- একজন শিক্ষক ঢাকার কোনো কলেজ থেকে স্থানান্তরিত হয়ে চট্টগ্রামের কোনো কলেজে গিয়ে শিক্ষকতা করলে তাকে আমরা অভ্যন্তরীণ গতিশীলতা বলে থাকি।

খ. আন্তর্জাতিক গতিশীলতা: কোনো শ্রমিক কাজের উদ্দেশ্যে এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থানান্তরিত হলে তাকে আন্তর্জাতিক গতিশীলতা বলে। যেমন- বাংলাদেশের কোনো প্রকৌশলী ওমানে গিয়ে কাজ করলে তা আন্তর্জাতিক গতিশীলতা হবে।

২. পেশাগত গতিশীলতা (Occupational Mobility)

শ্রমিকের এক পেশা থেকে অন্য পেশায় পরিবর্তিত হয়ে কাজ করাকে পেশাগত গতিশীলতা বলে। যেমন- কোন ব্যক্তি কৃষিকাজ ছেড়ে পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে।

পেশাগত গতিশীলতাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

ক. আনুভূমিক গতিশীলতা ও

খ. উল্লম্ব গতিশীলতা।

ক. আনুভূমিক গতিশীলতা: কোনো শ্রমিকের পেশা ও পদ অপরিবর্তিত রেখে এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত হওয়াকে আনুভূমিক গতিশীলতা বলে। যেমন- একজন পোশাক শ্রমিক প্যান্ট তৈরির কারখানা হতে টি-শার্ট তৈরি কারখানায় যোগদান করেন। এক্ষেত্রে এ শ্রমিকের ক্ষেত্রে এটি হবে আনুভূমিক গতিশীলতা।

খ. উল্লম্ব গতিশীলতা: শ্রমিক একই পেশায় বা শিল্পে বা ভিন্ন ভিন্ন শিল্পের নিম্নস্তর হতে উচ্চস্তরে নিয়োগ প্রাপ্ত হলে তাকে উল্লম্ব গতিশীলতা বলে। যেমন- কোনো পোশাক কারখানার শ্রমিক যদি ওই কারখানার উচ্চতর ‘পদ সুপারভাইজার হিসেবে নিয়োগ পায় তবে তাকে উল্লম্ব গতিশীলতা বলা হবে।

৩. শিল্পগত গতিশীলতা (Industrial Mobility)

শ্রমিক কাজের উদ্দেশ্যে এক শিল্প থেকে অন্য শিল্পে নিয়োজিত হলে তাকে শিল্পগত গতিশীলতা বলে। যেমন- পোশাক শিল্পে কর্মরত কোনো শ্রমিক পাট শিল্পে নিয়োজিত হলে তাকে শিল্পগত গতিশীলতা বলে।

ফার্ম ও শিল্পের মধ্যে পার্থক্য কি?

৪. স্তরগত গতিশীলতা (Stair Mobility)

শ্রমের স্তরগত গতিশীলতা বলতে শ্রমিকের একই পেশা বা শিল্পের এক স্তর থেকে অন্য স্তরে উপনীত বা উন্নতি হওয়াকে বোঝায়। যেমন- একজন ব্যাংকার ব্যাংকে জুনিয়র অফিসার হতে সিনিয়র অফিসার হিসেবে পদোন্নতি পেলে তা হবে স্তরগত গতিশীলতা।

পরিশেষে বলা যায়, একটি দেশের উন্নতির ক্ষেত্রে শ্রমিকের গতিশীলতা খুবই প্রয়োজন। এ গতিশীলতার মাধ্যমে শ্রমিক নিজের যেমন জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে, পক্ষান্তরে দেশের জাতীয় আয়েও বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়।

Related Posts