Home » হিসাবরক্ষণ ও হিসাববিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর

হিসাবরক্ষণ ও হিসাববিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর

এবং হিসাববিজ্ঞান কলা না বিজ্ঞান ব্যাখ্যা কর

by Rezaul Karim
হিসাবরক্ষণ ও হিসাববিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য,

হিসাবরক্ষণ ও হিসাববিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য

ব্যবসায়ের দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেন সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে লিপিবদ্ধ করার নাম হিসাবরক্ষণ। পক্ষান্তরে ব্যবসায়ের ফলাফল ও অবস্থা নির্ণয়ের লক্ষ্যে সমগ্র হিসাবপদ্ধতির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের কৌশল শিক্ষাদানকারী শাস্ত্রকে বলা হয় হিসাববিজ্ঞান। সাধারণ দৃষ্টিতে দু’বিষয়কে একই বলে গণ্য করা হয়। কিন্তু ব্যবহারিক ক্ষেত্রে দু’বিষয়ের পরিধি বিশ্লেষণ করলে নিম্নে হিসাবরক্ষণ ও হিসাববিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য সমূহ তুলে ধরা হলো-

হিসাবরক্ষণ হিসাববিজ্ঞান
১. হিসাবরক্ষণ ব্যবসায়ের লেনদেন সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। ১. হিসাববিজ্ঞান এসব লেনদেন বিশ্লেষণ করে অর্থনৈতিক তথ্য ব্যবহারকারীদের কাছে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
২. হিসাবরক্ষণ, হিসাববিজ্ঞানের প্রাথমিক স্তর। ২. হিসাববিজ্ঞান একটি পূর্ণাঙ্গ স্তর।
৩. লেনদেন জাবেদায় লিপিবদ্ধ করে খতিয়ান প্রস্তুত করার মধ্যেই হিসাবরক্ষণ সীমাবদ্ধ থাকে। ৩. হিসাববিজ্ঞান খতিয়ান হতে হিসাব সংক্ষেপ করে লাভ-লোকসান; সম্পত্তি ও দায়ের আর্থিক চিত্র ব্যবস্থাপনা ও আগ্রহী ব্যক্তিদেরকে যোগান দেয়।
৪. হিসাবরক্ষণের কাজ যেখানে শেষ। ৪. হিসাববিজ্ঞানের কাজ সেখান হতে শুরু।
৫. হিসাবরক্ষণের কাজ অনেকটা নিয়মতান্ত্রিক। ৫. হিসাববিজ্ঞানের কাজ অনেকটা উদ্দেশ্যমূলক ও পরিবর্তনশীল।
৬. হিসাবরক্ষণের উদ্দেশ্য হলো হিসাববিজ্ঞানের কাজের ক্ষেত্র তৈরি করা। ৬. হিসাববিজ্ঞানের মূল উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন খবরাখবর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে তুলে ধরা।
৭. হিসাবরক্ষণ হিসাববিজ্ঞানেরই একটি প্রাথমিক অংশ। হিসাববিজ্ঞানের পরিধি অনেক বড়।

পরিশেষে বলা যায়, হিসাবরক্ষণ ও হিসাববিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য মূলত তত্ত্বগত আলোচনায় সীমাবদ্ধ থাকে। ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এদের উভয়ের মধ্যে খুব সূক্ষ্ম পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

হিসাববিজ্ঞানকে ব্যবসায়ের ভাষা বলা হয় কেন? – ব্যাখ্যা কর

হিসাববিজ্ঞান কলা না বিজ্ঞান ব্যাখ্যা

হিসাববিজ্ঞান ব্যবসায়ের দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেনসমূহ একটি নির্দিষ্ট নিয়ম এবং নীতি মোতাবেক লিপিবদ্ধ করে ব্যবসায়ের সার্বিক অবস্থা নির্ণয় করে থাকে। অর্থাৎ এটি ব্যবসায়ের সঠিক অবস্থা নিরূপণকল্পে উক্ত আর্থিক অবস্থার কারণ (Cause) বিশ্লেষণপূর্বক তার চূড়ান্ত ফলাফল নির্ণয় করে।

বিজ্ঞান প্রতিটি বস্তু এবং ঘটনার প্রকৃত কারণ বিশ্লেষণ করে তার ফলাফল প্রদানপূর্বক মানবজাতির জ্ঞানভান্ডার আরও পরিপূর্ণ করার প্রয়াসে ব্যস্ত। যেহেতু হিসাববিজ্ঞান শাস্ত্র ও বিজ্ঞানের ন্যায় কারণ এবং এর ফলাফল নির্ণয় করে থাকে; সেহেতু একে নিঃসন্দেহে বিজ্ঞান বলে অভিহিত করা যায়।

পক্ষান্তরে ব্যবসায়ের দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেনসমূহ হিসাবের বইতে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি এবং নীতি মোতাবেক লিপিবদ্ধ করা হয়। যেহেতু হিসাববিজ্ঞান কার্য একটি বিশেষ নীতি, পদ্ধতি এবং ব্যবস্থার মাধ্যমে সুসম্পন্ন হয় সেহেতু এটিকে কলাও বলা যায়।

পরিশেষে বলা যায়, হিসাববিজ্ঞান একদিকে যেমন বিজ্ঞান অপরদিকে এটি কলা। তাই এটিকে বিজ্ঞান এবং কলা উভয়ই বলা চলে।

হিসাব বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর

Related Posts