অপরাধের কারণ সমূহ
অপরাধের কারণ সম্পর্কে অপরাধতত্ত্ববিদ ও সমাজতত্ত্ববিদদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। অপরাধের কারণ নির্ধারণ করতে গিয়ে কেউ সামাজিক পরিবেশকে দায়ী করেছেন। কেউ মানুষের দৈহিক ও মানসিক অবস্থার মাঝে অপরাধের কারণ খুঁজেছেন। আবার কেউ বলেছেন আর্থিক ও সামাজিক অবস্থা; যেমন- সিজারে ল্যামব্রোসো (Cesare Lambroso) যাকে অপরাধ তত্ত্বের জনক বলা হয়, তিনি অপরাধের কারণ সম্বন্ধে মানুষের দৈহিক ও মানসিক অবস্থার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি তাঁর বিশ্লেষণে দেখিয়েছেন যে, মানুষের কতকগুলো দৈহিক উপাদান যার সাথে অপরাধপ্রবণতা জড়িত থাকে সেগুলো শরীরে বা শারীরিক গঠন-প্রণালিতে থাকলে মানুষ অপরাধপ্রবণ হয়ে থাকে। কিন্তু পরবর্তীকালে এ মতবাদকে বৈজ্ঞানিকগণ মূল্যহীন প্রমাণ করেছেন।
অবশ্য অপরাধের মূল কারণ খুঁজে বের করা কষ্টসাপেক্ষ। কারণ অপরাধজনিত ব্যবহার জটিল সমস্যা এবং কারণও খুব জটিল। কোন বিশেষ কারণে সকল অপরাধের সৃষ্টি হচ্ছে না। বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন প্রকার অপরাধ ঘটে থাকে। তবে অপরাধের মূল কারণ উদ্ঘাটন করতে হলে ব্যক্তির দৈহিক অবস্থার ব্যাখ্যা থেকে শুরু করে তার পরিবার, প্রাথমিক দল, পরিবেশ, শিক্ষা, অর্থনৈতিক অবস্থা এসবের পূর্ণ বিশ্লেষণ প্রয়োজন। এখানে সংক্ষেপে অপরাধের কারণগুলো আলোচনা করা হলো:
১. পারিপার্শ্বিক অবস্থা
পারিপার্শ্বিক অবস্থা বলতে ভৌগোলিক অবস্থা, জলবায়ু, আবহাওয়া প্রভৃতি প্রাকৃতিক অবস্থাকে বুঝিয়ে থাকে। সমাজবিজ্ঞানিগণ পারিপার্শ্বিকতার ব্যবধানে অপরাধের ব্যবধান লক্ষ্য করেছেন। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শীত ও গ্রীষ্মের তারতম্যের সাথে সাথে অপরাধের মাত্রারও ব্যবধান হয়ে থাকে; যেমন- উষ্ণ অঞ্চলে ব্যক্তির বিরুদ্ধে অধিক অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে। আবার শীতপ্রধান অঞ্চলে সম্পত্তির বিরুদ্ধে বেশি অপরাধ ঘটে থাকে। অর্থাৎ শীতপ্রধান অঞ্চলে বিষয় সম্পত্তি নিয়ে ও গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে ব্যক্তিকে নিয়ে অপরাধ ঘটে থাকে। অপরাধতত্ত্ববিদ ল্যামব্রোসো বলেন যে, “সমতল ভূমিতে যেরূপ নারী হরণ ও বলাৎকার সচরাচর দেখা যায়, পার্বত্য অঞ্চলে তা সেরূপ দেখা যায় না।”
অপরাধের বৈশিষ্ট্য কি কি? |
তবে অনেক ক্ষেত্রে অপরাধের মূল কারণ হিসেবে পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে দায়ী করা যায় না, তা একটি গৌণ কারণ। শীতপ্রধান দেশের সমাজব্যবস্থায় ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির সম্পর্ক খুব বেশি পরিলক্ষিত হয় না। শীতের জন্য একের সাথে অন্য লোকের মেলামেশা খুব একটা হয়ে উঠে না। কিন্তু শীতপ্রধান দেশে অর্থনৈতিক অবস্থা সচ্ছল। ফলে সম্পত্তির জন্য অধিক অপরাধ সংঘটিত হয় না। আবার গ্রীষ্মপ্রধান দেশে ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির মেলামেশা বেশি হয়ে থাকে এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে খুব অসুবিধা দেখা যায়। সেখানে পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে নানা প্রকার অপরাধ ঘটে থাকে।
২. ব্যক্তির দৈহিক ও মানসিক অবস্থা
অপরাধতত্ত্বের জনক সিজারে ল্যামব্রোসো মনে করেন, অপরাধের কারণ মানবদেহ থেকে উৎপত্তি হয়ে থাকে। তিনি মনে করেন, অপরাধপ্রবণতা কতকগুলো দৈহিক উপাদানের সাথে জড়িত। মানসিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে অপরাধ করে থাকে। দৈহিক ভোগের জন্য অনেকে বলাৎকার ‘করে। এছাড়াও মানুষ অনেক ক্ষেত্রে আবেগপ্রবণ হয়ে থাকে এবং আবেগের বশবর্তী হয়ে ভালো-মন্দ জ্ঞান হারিয়ে অপরাধে লিপ্ত হয়। দুর্বল চিত্তের লোকেরা সমাজের লোকদের সাথে অনেক সময় মেলামেশা করতে সংকোচবোধ করে এবং ধীরে ধীরে অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠে। আবার অনেক সময় দেখা যায় নানারকম রোগের ফলে মস্তিষ্ক বিকৃতি ও মানসিক অসাম্য ঘটে থাকে; যেমন- দেখা গেছে কোন কোন লোকের মস্তিষ্কে দোষ থাকলে বিবাদপ্রিয় ও মামলাবাজ হয়ে থাকে। মনস্তত্ত্ববিদগণও মনে করেন যে, আবেগজনিত অসাম্যের কারণে যেসব লোক যৌবনে অশান্তি ভোগ করে, পরবর্তীকালে তারা অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠে। কিন্তু পরবর্তীকালে সমাজবিজ্ঞানিগণ এ মতবাদগুলোকে অপরাধের গৌণ কারণ বলে বিবেচনা করেন।
৩. বংশগত কারণ
অপরাধপ্রবণতা মানুষের বংশগত কারণ কি না তা নিয়ে সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানিগণ অপরাধকে বংশগত বলেই অধিক মনে করেন। কারণ অপরাধপ্রবণতা বংশগত ও দেহগত না হলে কিভাবে তা সামাজিক পরিবেশের উপর প্রতিফলিত হয়ে থাকে তা নিয়েও বিতর্কের অন্ত নেই। ব্যক্তি চরিত্র বিকাশে এবং আচার-আচরণের দায়িত্ব প্রাথমিক পর্যায়ে পিতা-মাতার প্রভাব থেকে গড়ে উঠে। পিতা-মাতার মধ্যে যদি বিচ্ছেদ ঘটে তবে সন্তান-সন্ততির মধ্যে সমাজবিরোধী মনোভাবের বিকাশ ঘটে থাকে। যে পরিবারে পিতা-মাতা মাতাল, নৈতিক চরিত্রহীন, মৃগীরোগ, পাগল বা দুর্বল চিত্তের থাকে, সেখানে স্বাভাবিকভাবে ছেলে-মেয়েরাও অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠে। এছাড়াও স্নায়বিক দুর্বলতা, অলসতা ও অন্যান্য মানসিক কারণগুলো বংশানুক্রমিক ব্যক্তিত্বের পূর্ণ বিকাশের পথে মারাত্মক প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়।
৪. সামাজিক কারণ
সামাজিক কারণেই অপরাধ বেশি সংঘটিত হয় বলে সমাজবিজ্ঞানীরা অভিমত ব্যক্ত করেন। কারণ অপরাধ হচ্ছে সামাজিক শৃঙ্খলার বিপরীত কাজ। সামাজিক অবস্থার সাথে অপরাধপ্রবণতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। একদিকে সামাজিক অবস্থা সুষ্ঠু হলে ব্যক্তির যতই দুর্বলতা ও মানসিক যাতনা থাকুক না কেন সমাজের পরিবেশে তা লীন হয়ে যায়। আবার অপরদিকে দেখা যায় যে, সামাজিক পরিবেশে যদি অপরাধপ্রবণতা বজায় থাকে ব্যক্তি চরিত্র যতই সুষ্ঠু হোক না কেন একদিন না একদিন তা তাকে প্রভাব বিস্তার করবে; যেমন- গৃহের অবস্থা, খেলার মাঠের পরিবেশ, স্কুল, সামাজিক প্রভাব, সমাজের রীতি-নীতি, সমাজবিরোধী লোকদের সাহচর্য, শ্রেণিবিদ্বেষ, আদালত ও কারাগার, ধর্ম ও সভ্যতার মৌলিক উপাদান- এসব অবস্থা মানুষকে বিশেষভাবে ব্যক্তিজীবনে প্রভাবান্বিত করে। কাজেই দেখা যাচ্ছে যে, ব্যক্তি চরিত্র বিকাশে এবং তার আচার-ব্যবহার সংশোধনে সমাজের প্রভাব অপরিসীম। নিম্নোক্ত কারণে মানুষ সামাজিক অপরাধ করে থাকে:
ক. সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় (Breaking of social values)
প্রত্যেক সমাজেরই নিজস্ব কিছু আদর্শ ও মূল্যবোধ (Norms and Values) আছে যার উপর ভিত্তি করে ঐ সমাজ টিকে থাকে। কিন্তু কোন সমাজে যখন মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটে, মানবীয় গুণাবলির বিকাশ না ঘটে, সৎ ও যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে মূল্যায়িত করা না হয়, অর্থকেই সমাজের প্রধান মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়, সমাজের শিক্ষিত ও সম্মানিত ব্যক্তিরা যখন তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় তখন সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অপরাধ বিস্তার লাভ করে।
খ. উচ্চাভিলাষী জীবনের স্বপ্ন (Dream of high ambitious life)
শিল্পায়ন ও নগরায়ণ এবং তথ্যপ্রযুক্তির অব্যাহত সমৃদ্ধির ফলে বিশ্বব্যাপী বৈষয়িক বিষয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। মানুষ আরাম-আয়েশে জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে, বিলাসবহুল দ্রব্যসামগ্রী ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়ছে, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষ চায় রাতারাতি বড় লোক হতে, চায় যশ, খ্যাতি, সম্মান, গাড়ি-বাড়ি, টাকা-কড়ি, আধিপত্য। তাই উচ্চাভিলাষী স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশায় সে অসৎ পথে উপার্জনের দিকে ধাবিত হয়। ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িয়ে পড়ে।
গ. পারিবারিক কাঠামো (Family structure)
ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশে পরিবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে পরিবারে পারিবারিক কাঠামো সুদৃঢ়, পিতা-মাতা, ভাই-বোন ও ছেলে-মেয়েদের মধ্যকার সম্পর্ক তাৎপর্যপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ, সেখানে অপরাধপ্রবণতা দেখা যায় না। সাধারণত ভঙ্গুর পরিবারে অপরাধপ্রবণতা বেশি হয়। কেননা পরিবার পরিমণ্ডলে সুষ্ঠুভাবে যদি কারো ব্যক্তিত্বের বিকাশ না ঘটে তবে সে পরিবারের সন্তান-সন্ততিরা অপরাধী হিসেবে গড়ে উঠে।
বিচ্যুতি কি, সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও বিচ্যুতির কারণ |
ঘ. অশ্লীলতার প্রভাব (Influences of vulgarity)
যে কোন অশ্লীল আচরণ, অশ্লীল গল্প-গুজব, অশ্লীল পত্র-পত্রিকা বা ছায়াছবি, অশ্লীল গান-বাজনা ইত্যাদি সকল বয়সী মানুষের আচরণে কু-প্রভাব ফেলতে বাধ্য। বর্তমান বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের লোকেরা ঐসব অশ্লীলতার শিকার। ফলে আমাদের সমাজে অপরাধের মাত্রা আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৫. অর্থনৈতিক কারণ (Economic causes)
আধুনিককালে অর্থনৈতিক বৈষম্য ও হীনাবস্থা অপরাধপ্রবণতার একটি প্রধান কারণ বলে পরিগণিত হচ্ছে। নিম্নে অপরাধের অর্থনৈতিক কারণগুলো বিধৃত করা হলো:
ক. দারিদ্র্য (Poverty)
দারিদ্র্য অপরাধের একটি প্রধান কারণ। দারিদ্র্য কবলিত পরিবারে কেউ তার নিত্যদিনের মৌল চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারে না। ফলে তাদের মধ্যে অপরাধমূলক আচরণ সৃষ্টি হতে পারে। যেমন- অভাবের তাড়নায় মানুষ চুরি করতে বাধ্য হয়। মেয়েরা দেহ বিক্রি করে- যদিও এটি সর্বস্তরে প্রযোজ্য নয়।
খ. বেকারত্ব (Unemployment)
বেকারত্ব অপরাধের একটি অন্যতম কারণ। বেকারত্বের কারণে শুধু অনুন্নত দেশে নয়, উন্নত দেশেও অপরাধপ্রবণতা দেখা যায়। বেকারত্বের কারণে খুন, ছিনতাই, রাহাজানি ইত্যাদি বেড়ে যায়। বেকারত্বের দুঃসহ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য অনেকে মাদকাসক্ত হয়ে নানাবিধ অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।
গ. পেশা (Occupation)
অপরাধবিজ্ঞানীরা পেশার সাথে অপরাধের সম্পর্ক নির্ণয়ের চেষ্টা করেছেন। তারা দেখিয়েছেন, এমন কিছু পেশা আছে যার সাথে অপরাধের একটি যোগসূত্র রয়েছে। অর্থাৎ কিছু কিছু পেশাতে অপরাধের তীব্রতা বেশি। বিভিন্ন গবেষণালব্ধ ফলাফল থেকে দেখা যায় যে, কৃষি ও কলকারখানায় নিয়োজিত পেশাজীবীদের তুলনায় বাণিজ্যিক পেশাজীবীদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বেশি। আবার বাণিজ্যিক ও কারিগরি পেশাজীবীদের তুলনায় সৈনিক ও নাবিকদের মধ্যে ধর্ষণ ও অন্যান্য অপরাধের মাত্রা বেশি পরিলক্ষিত হয়।
ঘ. অপরিমিত অর্থ (Unlimited money)
প্রয়োজনের অতিরিক্ত টাকা মানুষকে বেপরোয়া করে তোলে। বিশেষ করে পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় মুষ্টিমেয় মানুষের হাতে অধিক পরিমাণ সম্পদ কুক্ষীগত থাকায় তারা অনাকাঙ্ক্ষিত পথে অর্থ ব্যয় করে এবং বিভিন্ন অপরাধ জগতে প্রবেশ করে।
‘৬. রাজনৈতিক কারণ (Political causes)
সমাজে প্রভাব-প্রতিপত্তি স্থাপনের জন্য আর্থিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার সাথে সাথে রাজনৈতিকভাবেও সমাজের কিছুসংখ্যক ব্যক্তি যখন আইনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয় তাই রাজনৈতিক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এ ধরনের অপরাধ বেশি সংঘটিত হয় রাজনৈতিক অপরাধের প্রকৃতি নিম্নরূপ:
ক. বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা;
খ. প্রতিপক্ষের মিছিল এবং অফিস ও বাসস্থানে হামলা করা;
গ. বেআইনীভাবে রাজনৈতিক দল গঠন;
ঘ. সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মদদ দান;
‹ ঙ. রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের হত্যার পরিকল্পনা;
চ. নির্লজ্জভাবে দলীয়করণ ও আত্মীয়করণ;
ছ. অবাঞ্ছিত কারণে হরতাল ও ধর্মঘট ডাকা।
‘বস্তুত বর্তমান বাংলাদেশের সামাজিক বিশৃঙ্খলা, মূল্যবোধের অবক্ষয়, হত্যা, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, নিরাপত্তাহীনতা, চাঁদাবাজি ইত্যাদির মূলে রয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ।
৭. সাংস্কৃতিক কারণ (Cultural causes)
সাংস্কৃতিক কারণেও অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে। বিশেষ করে পেশা সমাজে যখন সাংস্কৃতিক সংঘাত ও সাংস্কৃতিক পশ্চাৎপদতা দেখা দেয় কিংবা বাইরের কোন অপসংস্কৃতি যখন স্থানীয় সংস্কৃতির বিনষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তৃতি ঘটে। বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের অধিকাংশ দেশে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুপ্রবেশের ফলে সেখানকার স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। এতে করে অনেকের পক্ষে পুরাতন আদর্শ ও মূল্যবোধ পরিত্যাগ করে নতুন আদর্শ, মূল্যবোধ ও দর্শন গ্রহণ করা সম্ভব হয়। না। ফলে সংঘাত সৃষ্টি হয় এবং অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যায়।
পরিশেষে বলা যায়, অপরাধের বিষয়বস্তু ও এর কারণ নিয়ে অপরাধ- তত্ত্ববিদগণও বিভিন্ন মতামত পোষণ করেছেন। সমাজবিজ্ঞানিগণ মনে করেন যে, অপরাধ বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। তবে তা বিশেষ করে সামাজিক পরিবেশের উপর নির্ভরশীল। কারণ সামাজিক পরিবেশ যদি সুষ্ঠু থাকে সেখানে অপরাধের মাত্রা খুব অল্পই দেখা যায়।
1 comment
[…] অপরাধের কারণ সমূহ কি কি? […]
Comments are closed.