বিশ্বের সবকটা উন্নত রাষ্ট্রের মধ্যে আমেরিকা অন্যতম। শিক্ষাগত, অর্থনৈতিক এবং জীবনযাত্রার মানে বাংলাদেশ থেকে অনেক বেশি উন্নত হওয়ায় বাংলাদেশের বহু মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে বা উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকায় যেতে চান। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে সরাসরি আমেরিকায় যেতে হলে অবশ্যই কিছু যোগ্যতা পূরণ করতে হবে। এখানে আমরা আমেরিকার বিভিন্ন ভিসা, যেমন স্টুডেন্ট, ভিজিট ও দীর্ঘকালীন ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
আমেরিকার ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
আমেরিকার ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো প্রাথমিকভাবে বিবেচনা করা হয়-
- ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা – ইংরেজিতে কথা বলার এবং লেখার দক্ষতা থাকতে হবে। বিশেষত, ইন্টারভিউতে ইংরেজি ভাষার ওপর পারদর্শিতা গুরুত্বপূর্ণ।
- ভিসা আবেদন ফর্ম পূরণ – ভিসা আবেদন ফর্ম সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
- বৈধ পাসপোর্ট – ন্যূনতম ৬ মাসের বৈধ পাসপোর্ট থাকা আবশ্যক এবং এতে পর্যাপ্ত ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
- ছবি – নির্দিষ্ট ফরম্যাটে বেশ কয়েকটি পাসপোর্ট সাইজ ছবি জমা দিতে হবে।
- মেডিকেল রিপোর্ট ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স – স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে মেডিকেল রিপোর্ট এবং পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
- বৈধ ব্যাংক স্টেটমেন্ট – অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রমাণ হিসেবে একটি বৈধ ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে।
পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক করার নিয়ম |
ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী
বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদনের জন্য নিচের কাগজপত্র প্রয়োজন:
- পাসপোর্ট – পাসপোর্টের মেয়াদ ন্যূনতম ৬ মাস থাকা আবশ্যক।
- ছবি – নির্দিষ্ট সাইজে ছবি জমা দিতে হবে।
- ভিসা ফি’র রশিদ নম্বর – আবেদন প্রক্রিয়ায় ভিসা ফি পরিশোধের রশিদ প্রয়োজন।
- বিস্তারিত তথ্য – আবেদনকারীর পেশাগত, সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং পারিবারিক তথ্য।
আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
প্রতিবছর বহু শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকা যাত্রা করেন। তবে এই ভিসা পেতে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা প্রয়োজন। এগুলো হলো-
- IELTS স্কোর – IELTS পরীক্ষায় ন্যূনতম ৬ স্কোর থাকতে হবে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ – এসএসসি অথবা এইচএসসি সনদপত্র জমা দিতে হবে।
- ইংরেজি ভাষায় পারদর্শিতা – ইংরেজিতে সাবলীল হতে হবে।
- বয়স সীমা – আবেদনকারীর বয়স ১৪ থেকে ৭৯ বছরের মধ্যে হতে হবে।
আমেরিকার ভিজিট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
বহু বাংলাদেশী নাগরিক ব্যক্তিগত ভ্রমণ বা পর্যটন উদ্দেশ্যে আমেরিকা যেতে চান। এই ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ – এসএসসি পাসের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে।
- IELTS পরীক্ষার স্কোর – উচ্চ স্কোর আবশ্যক।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট – আর্থিক স্থিতিশীলতার প্রমাণ।
- ভ্রমণের প্রমাণপত্র – পূর্বে কতগুলো দেশ ভ্রমণ করেছেন তার প্রমাণপত্র।
- ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা – ইংরেজিতে সহজে যোগাযোগ করতে সক্ষম হতে হবে।
দীর্ঘকালীন ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
আমেরিকায় দীর্ঘকালীন ভিসা বা B1/B2 ক্যাটাগরির ভিসা পাওয়ার জন্য কিছু বিশেষ যোগ্যতা দরকার:
- চাকরির অফার লেটার – যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরির প্রস্তাবপত্র।
- উচ্চতর শিক্ষা ও দক্ষতা – যদি আবেদনকারীর উচ্চতর ডিগ্রি বা কোনো বিশেষ দক্ষতা থাকে।
- পারিবারিক নাগরিকত্ব – আবেদনকারীর যদি কোনো বৈধ সঙ্গী বা পরিবারের সদস্য আমেরিকার নাগরিক হয়।
পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে মেডিকেল রিপোর্ট চেক করার নিয়ম |
প্রয়োজনীয় প্রশ্নোত্তর
আমেরিকা ভিসার দাম কত?
আমেরিকা ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য সাধারণত ১৬০ ডলার বা বাংলা টাকায় প্রায় ১৭ হাজার টাকা লাগে। মেডিকেল বা চিকিৎসা ভিসার জন্যও একই পরিমাণ টাকা খরচ হতে পারে।
আমেরিকার ভিসা কত প্রকার?
সাধারণত দুইধরনের ভিসা দেয়া হয়। একটি হলো অভিবাসী, আরেকটি অ-অভিবাসী।
বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫?
বাংলাদেশ থেকে সরকারিভাবে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের যাওয়ার জন্য ৯ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা লাগে। আবার বেসরকারিভাবে যাওয়ার জন্য ১২ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ পর্যন্ত লাগতে পারে। এটা নির্ভর করে ভিসা এবং বিমানের ক্যাটাগরি অনুযায়ী।
আমেরিকার ভিসা পেতে কতদিন লাগে?
আমেরিকার ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণকরণের পর ৩ থেকে ৫ সপ্তাহ মত সময় লাগে। এরপর ভিসাটি পেতে আরও ২ বা ৩ দিন সময় লাগতে পারে।
শেষ কথা
এই পোস্টের মাধ্যমে আমেরিকার বিভিন্ন ভিসা ক্যাটাগরির জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে। আশাকরি এই পোস্ট থেকে আপনারা আমেরিকার ভিসা পাওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা এবং আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন।