চাহিদা রেখা
যে রেখার সাহায্যে দ্রব্যের দাম ও চাহিদার পরিমাণের মধ্যে বিপরীত সম্পর্ক প্রকাশ করা হয় সেই রেখাই চাহিদা রেখা। চাহিদা সূচির মধ্যে দাম ও চাহিদার সম্পর্কে আমরা যে তথ্য পাই, তাকে রেখার সাহায্যে প্রকাশ করলে চাহিদা রেখা পাওয়া যায়। চাহিদা রেখা দ্রব্যের বিভিন্ন দাম ও সেই বিভিন্ন দামে দ্রব্য ক্রয়ের পরিমাণ দেখায়।
চাহিদা সূচি কি | চাহিদা সূচি কাকে বলে | চাহিদা সূচির প্রকারভেদ |
একটি চাহিদা রেখা নিচে অঙ্কন করা হলো-
চিত্রে OX অক্ষে চাহিদার পরিমাণ এবং OY অক্ষে দ্রব্যের দাম দেখানো হয়েছে। দ্রব্যের দাম যখন ৫ টাকা তখন দ্রব্যের চাহিদা ২০০ একক হয়। যাদের সমন্বয় বিন্দু a। এখন দ্রব্যের দাম হ্রাস পেয়ে ৪ টাকা হলে দ্রব্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে ৪০০ একক হয়। তখন তাদের সমন্বয় বিন্দু ৮। অনুরূপভাবে, দ্রব্যের দাম আরও হ্রাস পেয়ে ৩ টাকা, ২ টাকা ও ১ টাকা হলে চাহিদার পরিমাণ যথাক্রমে ৬০০ একক, ৮০০ একক ও ১০০০ একক হয়। এক্ষেত্রে সমন্বয় বিন্দুসমূহ যথাক্রমে c, d ও e পাওয়া যায়। এভাবে সমন্বয় বিন্দুসমূহ a, b, c, d ও e দ্রব্যের দাম ও ক্রয়ের পরিমাণের মধ্যে সম্পর্ক দেখায়। এখন a, b, c, d, e বিন্দু যোগ করে DD1 যে রেখা পাওয়া যায়, তাই চাহিদা রেখা।
চাহিদা সূচি ও চাহিদা রেখার পার্থক্য
দ্রব্যের দাম এবং চাহিদার পরিমাণের মধ্যকার সম্পর্ক যখন তালিকার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে চাহিদা সূচি বলা হয় এবং দ্রব্যের দাম এবং চাহিদার পরিমাণের মধ্যকার সম্পর্ক যখন রেখাচিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে চাহিদারেখা বলা হয়। অর্থাৎ চাহিদা সূচি ও চাহিদা রেখা মূলত চাহিদা বিধি প্রকাশের দুটি ভিন্ন পদ্ধতি মাত্র। এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
১. কোনো নির্দিষ্ট সময়ে ক্রেতা বিভিন্ন দামে একটি দ্রব্যের যে পরিমাণ ক্রয় করে তা যখন তালিকার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে চাহিদা সূচি বলে। অন্যদিকে, কোনো নির্দিষ্ট সময়ে ক্রেতা বিভিন্ন দামে একটি দ্রব্যের যে বিভিন্ন পরিমাণ ক্রয় করে তা যখন রেখাচিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় তখন তাকে চাহিদা রেখা বলে।
চাহিদা বিধির ব্যতিক্রম গুলো কি কি? |
২. চাহিদা সূচিকে চাহিদা বিধির গাণিতিক প্রকাশ বলে অভিহিত করা হয়। পক্ষান্তরে, চাহিদা রেখাকে চাহিদা বিধির জ্যামিতিক প্রকাশ বলা হয়।
৩. চাহিদা সূচি, চাহিদা অপেক্ষকের ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে, চাহিদারেখা চাহিদা সমীকরণের ওপর নির্ভরশীল।
৪. ভোক্তার আচরণের ওপর ভিত্তি করে চাহিদা সূচি তৈরি করা হয়। পক্ষান্তরে, চাহিদা সূচির ওপর ভিত্তি করে চাহিদা রেখা অঙ্কন করা হয়।
৫. সাধারণত চাহিদা সূচিতে সূচির বাম দিকে দ্রব্যের দাম এবং ডান দিকে চাহিদার পরিমাণ বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে, চাহিদা সূচিতে ভূমি অক্ষে চাহিদার পরিমাণ এবং লম্ব অক্ষে দ্রব্যের দাম নির্দেশ করা হয়।
অতএব চাহিদা সূচি ও চাহিদা রেখার মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। উভয়ই চাহিদা সূচি প্রকাশের দুটি ভিন্ন মাধ্যম হিসেবে কিছু পার্থক্য বহন করে।
1 comment
[…] […]
Comments are closed.