পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ফার্মের স্বল্পকালীন ভারসাম্য
কোনো উৎপাদক প্রতিষ্ঠান বা ফার্মের মূল লক্ষ্য সর্বাধিক মুনাফা অর্জন ‘করা। মুনাফা উৎপাদক বা সংগঠকের পারিতোষিক। মোট উৎপাদন ব্যয় ও মোট বিক্রয়লব্ধ আয়ের যে পার্থক্য তাই মুনাফা। বিক্রয়লব্ধ আয় থেকে ভূমির খাজনা, শ্রমের মজুরি, মূলধনের সুদ প্রভৃতি ব্যয়ের পর যে উদ্বৃত্ত থাকে, তাকে উৎপাদক বা সংগঠকের মুনাফা বলা হয়। যখন কোনো ফার্ম সর্বাধিক মুনাফা অর্জন করতে পারে, তখন সেই ফার্ম বা উৎপাদক প্রতিষ্ঠান ভারসাম্যে উপনীত হয়।
প্রত্যেক ফার্মের প্রধান লক্ষ্য হলো সর্বাধিক মুনাফা লাভ করা। তাই প্রত্যেক উৎপাদনকারী দ্রব্যের পরিমাণ এমনভাবে নির্ধারণ করে যাতে তার মুনাফা সর্বাধিক হয়। পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ফার্মের স্বল্পকালীন ভারসাম্য এর শর্ত দুটি। যথা-
১. প্রাথমিক শর্ত: ফার্মের প্রান্তিক ব্যয় প্রান্তিক আয় গড় আয় = দাম হতে হবে।
অর্থাৎ, MC= MR = AR = P হবে।
আরও পড়ুন
পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজার কাকে বলে ও বৈশিষ্ট্য |
২. পর্যাপ্ত শর্ত: ভারসাম্য বিন্দুতে প্রান্তিক ব্যয় রেখা প্রান্তিক আয় রেখাকে নিচের দিক থেকে ছেদ করে উপরের দিকে উঠবে। অর্থাৎ MC রেখার ঢাল > MR রেখার ঢাল হবে।
ভারসাম্যের শর্তের গাণিতিক ব্যাখ্যা
পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ফার্মের স্বল্পকালীন ভারসাম্য শর্তসমূহের গাণিতিকভাবে ব্যাখ্যা করা যায়।
ধরি, ফার্মের মোট আয় = TR
মোট ব্যয় = TC
এক্ষেত্রে আমরা জানি, মুনাফা (n) = মোট আয় (TR) মোট ব্যয় (TC)
.:. MR রেখার ঢাল < MC রেখার ঢাল যা মুনাফা সর্বোচ্চকরণের দ্বিতীয় বা পর্যাপ্ত শর্ত।
আরও পড়ুন
বাজার কত প্রকার ও কি কি ? |
পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে যে দাম বিদ্যমান থাকে, তাতেই ফার্ম দ্রব্য বিক্রয় করে। ফার্ম যত পরিমাণ দ্রব্যই বিক্রয় করুক না কেন, বাজার দাম প্রভাবিত করতে পারে না। তাই পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দাম রেখা OX রেখার সমান্তরাল হয়। এ দাম রেখাই আবার দ্রব্যের চাহিদা রেখা। এ বাজারে দ্রব্য বিক্রয়ের হ্রাস-বৃদ্ধি সত্ত্বেও দাম রেখা সমান্তরাল থাকে বলে প্রান্তিক আয় গড় আয় দাম। উপরিউক্ত শর্তাবলি পালনের মাধ্যমে পূর্ণ প্রতিযোগী ফার্ম তিন ধরনের ভারসাম্যে উপনীত হয়। যথা-
i. অস্বাভাবিক মুনাফা। যখন P > AC হয়।
ii. স্বাভাবিক মুনাফা। যখন P = AC হয়।
iii. লোকসানসহ ভারসাম্য। যখন AC > P > AVC হয়।