বাংলাদেশের দারিদ্র্য দূরীকরণের উপায়
দারিদ্র্য দূরীকরণ একটি বাস্তব সমস্যা। যে কোন রাষ্ট্রের সুনির্দিষ্ট জাতীয় নীতিমালা এবং সামাজিকভাবে আর্থিক সংগঠনের সহায়তায় সাধারণ জনগণকে কর্মে অনুপ্রেরণা জোগানোর মাধ্যমেই দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে জনগণকে মুক্ত করার সম্ভাবনা খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।
বাংলাদেশের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (২০২০-২৫) একটি লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্যতার হার ১৫.৬% এ নামিয়ে আনা। ২০২২ সমীক্ষা অনুযায়ী বর্তমানে তা ১৮.৭% এ আছে। কিন্তু এর প্রয়াস সহজসাধ্য নয়। কেননা ১৯৫১ সাল থেকে গ্রামীণ জনগণের দারিদ্র্য বিমোচনের প্রয়াস অব্যাহতভাবে পরিচালনা করে আসলেও দারিদ্র্য ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। বস্তুত দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য বিভিন্ন গবেষকদের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রমকে আরো সক্রিয় করে ‘লক্ষ্য দল’ গঠন করে স্বল্পমেয়াদি প্রকল্প প্রণয়ন করা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে নিম্নে দারিদ্র্য দূরীকরণের উপায়গুলো উল্লেখ করা হলো:
১. জনসংখ্যা বৃদ্ধিরোধ করতে হবে। পরিকল্পিত পরিবার গঠনের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক সহায়তাসহ মৌলিক চাহিদা পূরণে কর্মক্ষম জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।
২. প্রকৃত কৃষকদের কৃষিকাজে সহায়তা করার ক্ষেত্রে কৃষিঋণ, সার ও প্রযুক্তিগত সাহায্য প্রয়োজন।
৩. লাগসই টেকনোলজি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে কৃষকদের কৃষিকাজে নিয়োজিত রাখতে হবে।
৪. প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ।
৫. কৃষি উৎপাদন আধুনিকায়নের সাথে সাথে গ্রামীণ সমাজে শিল্পকলকারখানা স্থাপন করা।
৬. গ্রামীণ সমাজে মৌসুমী বেকার কৃষকদের মঙ্গা অবস্থা মোকাবিলার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ।
বাংলাদেশের দারিদ্র্যের কারণ সমূহ বিস্তারিত জেনে নিন |
উপরিউক্ত বিষয়গুলোর উপর গুরুত্ব আরোপ করে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক কাঠামোর উন্নয়নের জন্য সুস্থ, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক অবস্থা সৃষ্টির প্রয়োজন। সমাজ থেকে দুর্নীতি, কালো টাকার প্রভাব, সন্ত্রাস, নিরক্ষরতা, নারীদের কর্মসংস্থান, বিদেশে জনশক্তি রপ্তানি ইত্যাদি ক্ষেত্রেও গুরুত্ব আরোপ করে দারিদ্র্য বিমোচনে এগিয়ে আসার প্রচেষ্টায় সকলকে নিজ নিজ ভূমিকা পালন করারও প্রয়োজন রয়েছে।
অতএব, উপরোক্ত আলোচনা থেকে আপনারা বাংলাদেশের দারিদ্র্য দূরীকরণের উপায় গুলো সম্পর্কে জানতে পারলেন।