সামাজিক নিয়ন্ত্রণের বাহন সমূহ
সমাজজীবনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য পারস্পরিক সম্পর্কের মাঝে শৃঙ্খলাবদ্ধতার প্রয়োজন। সমাজজীবনে ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীগত জীবনকে একটি নির্দিষ্ট সামাজিক জীবনের নিয়ামক হিসেবে পরিচালনার আবশ্যকতা রয়েছে। সমাজজীবন তখনই শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে টিকে থাকতে পারে যখন পারস্পরিক সম্পর্ককে একটি অনুসরণ নীতি মেনে চলার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকে। আমরা দেখতে পাই যে, সমাজজীবনে শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য সমাজে কতকগুলো অনুসরণ নীতি অবশ্য পালনীয়। এ অনুসরণ নীতিকে সুষ্ঠুভাবে টিকিয়ে রাখার জন্য নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন। প্রত্যেক সমাজেই এ অনুসরণ নীতি মেনে চলার জন্য কতকগুলো মাধ্যম ও প্রণালি রয়েছে। আমরা নিম্নে সংক্ষেপে সামাজিক নিয়ন্ত্রণের বাহন সমূহ সম্পর্কে আলোচনা করছি:
১. পরিবার
পরিবার একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান কাজ হলো শিশুকে সৎ আচরণ এবং নিয়মানুবর্তিতা শিক্ষা দেওয়া। পারিবারিক সুন্দর পরিবেশে শিশু যা গ্রহণ করে অন্য কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান থেকে সে তা করে না। শিশুকে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্র হলো সুগঠিত পরিবার। তাছাড়া পারিবারিক বিশৃঙ্খলা থেকে সামাজিক বিশৃঙ্খলার উদ্ভব হয়। কারণ পরিবার সমাজজীবনের ভিত্তিস্বরূপ। সেজন্য সামাজিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যম হিসেবে পরিবার প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ব্যক্তির আচরণ ও তার স্বভাব নিয়ন্ত্রণ পরিবারের মধ্য থেকে হতে পারে। পরিবারের মাঝে নিয়ন্ত্রণ যদি শিথিল হয় তাহলে সমাজে ব্যক্তি অপরাধ করতে দ্বিধাগ্রস্ত হয় না। গ্রাম সমাজব্যবস্থায় পরিবার প্রতিষ্ঠান সামাজিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যম হিসেবে অধিক ক্রিয়াশীল।
সামাজিক নিয়ন্ত্রণ কি | সামাজিক নিয়ন্ত্রণ কাকে বলে |
২. ধর্ম
আদিকাল থেকেই ধর্মের মাধ্যমে সমাজ নিয়ন্ত্রিত হতো। ধর্মের নিয়মকানুন দ্বারা সামাজিক মানুষ নিজেদের পরিচালিত করে। এখনো প্রত্যেক দেশে ধর্মের দ্বারা সামাজিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে। আইন সংস্কারেও ধর্মের প্রভাব বিদ্যমান এবং ধর্ম আমাদেরকে সত্য ও মিথ্যা, ন্যায় ও অন্যায় সম্পর্কে মনোভাব জাগ্রত করে; যেমন- ইসলাম ধর্ম নারী ও পুরুষকে সমান অধিকার দান করেছে। এর প্রভাব দ্বারা সামাজিক জীবনে সুষম কর্মধারার পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ধর্মীয় গোঁড়া নীতি থাকাতে সমাজজীবনে বেশ কঠোর বিধিনিষেধ ছিল; যেমন- হিন্দু ধর্মে সতীদাহ প্রথা, বিধবা বিবাহ নিষিদ্ধ ও গঙ্গায় সন্তান বিসর্জন ইত্যাদি। অবশ্য এগুলো ঐশ্বরিক শক্তির ভয়ে মানুষ পালন করতো। নচেৎ সমাজে তখন নিন্দিত হতে হতো। সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে এসব গোঁড়ামি লোপ পেয়েছে। সমাজে ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রভাব মানবজীবনে বেশ সচেতনতার সৃষ্টি করেছে। ধর্মই আমাদের সুকুমার চিন্তাধারা, আমাদের সর্বোত্তম নৈতিক মান, মহত্তম ভাবাদর্শ এবং মহৎ জীবনযাপনে আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছে। তাছাড়া ধর্মকর্ম সম্পাদনে কতকগুলো বাহ্যিক আচার-অনুষ্ঠান রয়েছে। এসব আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সামাজিক সংহতি দৃঢ় হয়।
৩. লোকাচার ও লোকনীতি
মানুষ সমাজে যখন সংঘবদ্ধ হয়ে বাস করে তখন তাদের নিজস্ব আচরণের একটি ধারা গড়ে উঠে। আচরণের সাধারণ রীতিগুলোকে লোকাচার বলে অভিহিত করা হয়। ঐতিহ্যবাহী সমাজে লোকাচার সামাজিক নিয়ন্ত্রণের এক শক্তিশালী মাধ্যম। মানবসমাজের প্রত্যেকটি স্তরে ব্যবহারিক জীবন বহু প্রকার লোকাচারের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সমাজে স্বাভাবিক নিয়ম মেনে চলা থেকে অস্বীকৃতি প্রদান করলে সমাজে নিন্দিত হতে হয়। এক্ষেত্রে দেখা যায় যে, সমাজের প্রতিটি লোকাচার সামাজিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করে। লোকাচার প্রচলিত থাকায় সামাজিক মানুষের আচরণ একটি নির্দিষ্ট অনুসরণ নীতি মেনে চলে। কাজেই সমাজে সহজ এবং স্বচ্ছন্দ গতিতে জীবনযাপন করার জন্য লোকাচার বিশেষভাবে সাহায্য করে।
যখন সমাজে লোকাচারগুলো অবশ্য পালনীয় মনে করা হয়, তখন এটি লোকনীতির (Mores) পর্যায়ে পড়ে। লোকনীতি গোষ্ঠী জীবন ও সমষ্টি জীবনের নৈতিক সূত্র। সচেতনভাবেই হোক অথবা অবচেতনভাবেই হোক, এটি গোষ্ঠী জীবনের জীবনযাত্রাকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। সমাজবিজ্ঞানী সামনার বলেন যে, লোকাচার লোকনীতিতে পরিণত হয় তখন, যখন সুষ্ঠু জীবনযাত্রা ও কল্যাণভিত্তিক জীবনাদর্শ লোকাচারের তাত্ত্বিক ভিত্তি হয়। ম্যাকাইভার ও পেজের মতে, আমরা লোকাচারকে (Folkways) যদি কেবল আচরণের বা ব্যবহারের সামাজিক মান না বলে তাকে আচরণের নিয়ামক বা নিয়ন্ত্রকও বলি তাহলে আমরা লোকনীতির (Mores) একটি সংজ্ঞা পাই। বস্তুতপক্ষে, লোকাচার ও লোকনীতি সামাজিক ব্যবস্থা থেকে উদ্ভূত। মানুষের লৌকিক আচার তাতে পরিস্ফুট। সমাজের সব মানুষেরই ইচ্ছা তার গোষ্ঠীর লোকাচার ও লোকনীতি মান্য করে সে গোষ্ঠীর সাথে সামাজিক একাত্মবোধ দৃঢ় করা। সেজন্য লোকাচার ও লোকনীতি পালনের মাধ্যমে সামাজিক সংহতি টিকে থাকে।
৪. আইন
সামাজিক জীবনকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত করার জন্য আইন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আইন সমাজকে রক্ষা করে। সমাজের জনগণকে রক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য আইন শাস্তিদানের দায়িত্ব পালন করে। সমাজে যদি কোন আইন না থাকতো, তাহলে সমাজ সুসংগঠিত থাকতে পারতো না। আইনের মাধ্যমে ব্যক্তি আচরণের বিচার দ্বারা অপরাধের শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা থাকায় সমাজে যথেচ্ছাভাবে অপরাধ করতে ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে সাহস পায় না। যদি কোন সমাজে আইনের কঠোরতা শিথিল হয় তাহলে সে সমাজ সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রিত হতে পারে না। সুতরাং সমাজকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে হলে আইনের বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে।
সামাজিক জীবনে আইন দ্বারা যেমন অপরাধ দমন, বিশৃঙ্খল অবস্থা দূর করা ও সামাজিক জীবনে নিরাপত্তা বিধান করা হয়, তেমনি আইনের মাধ্যমে ব্যক্তির অধিকার ও কর্তব্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। সমাজবিজ্ঞানী রস (Ross) এর মতে, আইন হলো সামাজিক নিয়ন্ত্রণের একটি বিশেষ ব্যবস্থা যাকে একটি মেশিনের সাথে তুলনা করা যায়। অর্থাৎ সমাজজীবনকে একটি নির্দিষ্ট পথে পরিচালনার জন্য আইন বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
৫. শিক্ষা
সমাজে ব্যক্তিগত আদর্শকে গড়ে তুলতে হলে শিক্ষার প্রয়োজন সমধিক। শিক্ষা সামাজিক মানুষকে নানারকম কুসংস্কার থেকে মুক্ত হওয়ার সুযোগ দান করে এবং যুক্তিসংগত উপায়ে সুনির্দিষ্ট পথে চালনা করতে সহায়তা করে। শিক্ষাগত নিয়ন্ত্রণ কিশোরদের উপর আরোপিত হয়। জীবনের প্রথম পর্যায়ে শিক্ষার মাধ্যমে যদি নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে না উঠে তাহলে পরবর্তী জীবনে সমাজে কুলাঙ্গার হয়ে বাস করতে হয়।
সমাজবিজ্ঞানিগণ শিক্ষাকে সামাজিক নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি হিসেবে মনে করেন। শিক্ষা মানুষের সাথে মানুষের হৃদয়ের এমন সম্পর্ক গড়ে তোলে যা চিরন্তন সত্যের দিকে ধাবিত, সেজন্য অনেকে শিক্ষাকে আলোর সাথে তুলনা করেছেন। শিক্ষা মানবমনের সংকীর্ণতা, জড়তা ও কলুষতা দূর করতে সাহায্য করে। শিক্ষার মাধ্যমে পারস্পরিক মূল্যবোধ বুঝতে চেষ্টা করে। উচ্ছৃঙ্খল জীবন থেকে শৃঙ্খলতার মাঝে ফিরিয়ে আনার বাহন হিসেবে শিক্ষা কাজ করে।
বয়স্ক অপরাধ ও কিশোর অপরাধের মধ্যে পার্থক্য |
৬. জনমত
সামাজিক নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পন্থা বা মাধ্যমের মধ্যে জনমত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। জনমতের দ্বারা সামাজিক নিয়ন্ত্রণ অনেক ক্ষেত্রে খুব সহজে হয়ে থাকে। আধুনিক গণতান্ত্রিক বিশ্বে জনমতের মূল্য অত্যধিক। জনমতের সমর্থন ধন্য না হলে কোন মহান আন্দোলন সাফল্য লাভ করতে পারে না। সেজন্য আধুনিক যুগে জনমতের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
সমাজবিজ্ঞানী রস (Ross) জনমতকে তিনটি প্রাধান্যে বিভক্ত করেন। তাঁর মতে,
ক. কোন কর্ম বা ঘটনার ব্যাপারে প্রকাশিত জন-ভাবাবেগ বা জনশ্রদ্ধা, অস্বীকৃতি, গ্রহণমূলক মনোভাব, বিরক্তি।
খ. কোন কর্মের ব্যাপারে জনমতের বিচার বা জনমত গঠন, নিন্দাবাদ, অনুমোদন বা কাজটি মন্দ বা উত্তম ইত্যাকার সিদ্ধান্ত, উপযোগী বা অনুপযোগী এ ধরনের রায়-এ সমাপ্য।
গ. কোন কর্ম বা কার্যক্রমকে বন্ধ করা, বাধাদান বা ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি বা প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে ভাবাবেগ বা যাচাই ব্যতিরেকে জনমত কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা।
এছাড়া জনমত বিরোধী কোন কাজ সমাজে কেউ করতে পারে না। কারণ জনমত যদি কোন সংস্কার বা কোন প্রগতিশীল নীতির বিরুদ্ধে থাকে তা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।
জনমত শাসনতন্ত্রের দ্বারা কার্যকর হতে পারে। আবার সামাজিক জীবনে সার্বিকভাবে এর প্রভাব কার্যকর হতে পারে। জনগণ যদি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সমাজে শাসনকার্যে অংশগ্রহণ না করে, অথবা জনগণের সমর্থন না থাকে, তাহলে সমাজে তা বাস্তবায়িত হতে পারে না।
আবার সামাজিক জীবনে এমন কতকগুলো ঘটনা বা বিষয় রয়েছে যা আইনের দ্বারাও অনেক সময়ে নিয়ন্ত্রণে আনা কষ্টসাপেক্ষ হয়ে পড়ে। কিন্তু সমাজস্থ মানুষের সহযোগিতা ও জনমতের ফলে তা সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। সামাজিক জীবনে জনমতের দ্বারা সামাজিক প্রগতি হয়। জনমতের দ্বারা রক্ষণশীল মনোভাব দূর করে সমাজে অনেক সংস্কার সাধন করা সম্ভব। সেজন্য সামাজিক নিয়ন্ত্রণে জনমতের গুরুত্ব সমধিক। জনমত জনসভার বক্তৃতামঞ্চে ও গণসংযোগের মাধ্যমে; যথা বেতার, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে গড়ে উঠে।
৭. প্রচার
প্রচার হচ্ছে সামাজিক নিয়ন্ত্রণের একটা বিশেষ কৌশল। কোন একটি মনোভাবকে জনগণের সমর্থনে প্রতিষ্ঠিত করে সমাজে তা কার্যকর করাই প্রচারের লক্ষ্য; যেমন- সামাজিক জীবনে শৃঙ্খলা আনয়ন ও নৈতিক আদর্শ স্থাপন এবং ধর্মীয় চিন্তাধারা প্রতিষ্ঠা করার জন্য ধর্মের নীতিবাক্য প্রচার করে। প্রচারের মাধ্যমে জনগণের কাছে নানাবিধ তথ্য পরিবেশন করা হয়। তাছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো প্রচারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দাবিগুলো উত্থাপন করে। অনেক সময় শ্লোগান প্রচারের দ্বারা জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। আধুনিক শিল্পভিত্তিক শহরে প্রচার বিশেষ ভূমিকা পালন করে যার মাধ্যমে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
৮. রাষ্ট্র
রাষ্ট্র সমাজের একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। সমাজে এমন কতকগুলো বিষয় রয়েছে যা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বল প্রয়োগ করতে হয়। রাষ্ট্রীয় সার্বভৌম ক্ষমতাবলে অপরাধ দমনে, দুর্নীতি দমনে বা অর্থনৈতিক অবস্থাকে সামাজিক জীবনের সহায়ক করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আদিম সমাজে সামাজিক প্রথার মাধ্যমে ও ধর্মীয় বিধিবিধানের মাধ্যমে সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষা করা হতো। কিন্তু বর্তমান যুগে রাষ্ট্র সার্বিকভাবে সে দায়িত্ব পালন করছে। সেজন্য আইন বিভাগ, নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা বিভাগ; যথা: আদালত, পুলিশ ও প্রশাসন ব্যবস্থা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে। সেজন্য সমাজবিজ্ঞানিগণ রাষ্ট্রকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার অভিভাবক হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন।
৯. সামাজিক শ্রেণি
প্রত্যেক সমাজেই একটি Superior বা Dominant class অন্যান্য Inferior class এর উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। প্রভাবশালী শ্রেণির মধ্যে সামাজিক রীতিনীতি, মার্জিত ব্যবহার ও আদব-কায়দা একটু উন্নতমানের বলে প্রভাবশালী শ্রেণির দ্বারা Inferior শ্রেণি প্রভাবিত হয় ও আনুগত্য প্রকাশ করে। এভাবে Dominent class অন্যান্য Class এর ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করে।
১০. বিবাহ
বিবাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক নিয়ন্ত্রণের একটি তাৎপর্যপূর্ণ বাহন হিসেবে বিবেচিত। মানুষের যৌনতা, সন্তান লাভ ও ভাবাবেগগত আচরণ বিবাহের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়।
১১. ব্যক্তিত্ব
ব্যক্তিত্ব সামাজিক নিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। সমাজের অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব যাঁরা ন্যায়নীতি, আদর্শ ও সততার দিক থেকে গ্রহণযোগ্য তাঁদের আচার-আচরণকে একটি মডেল হিসেবে গ্রহণ করা হলে অন্যায় ও অসৎ পথ থেকে অনেকেই বেরিয়ে আসতে সক্ষম হবে।
১২. চিত্তবিনোদন
বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন ধরনের চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে; যেমন- ক্লাব, খেলাধুলা, পার্ক ইত্যাদি। এগুলো সংশ্লিষ্ট সমাজের শিশু-কিশোর, যুবক- যুবতী এমনকি বৃদ্ধদের মানসিক উন্নতি ও বিকাশে সহায়তা করে সামাজিক নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করে থাকে।
পরিশেষে বলা যায়, সমাজ গতিময়। সুতরাং গতিময় সমাজে নেমে আসে অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব। কিন্তু প্রয়োজন রয়েছে এ সমস্যাকে কাটিয়ে সমাজের গতিকে সুসংহত করা এবং এভাবেই এসেছে সমাজে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধ প্রতিরোধের অর্থবহতা। সুতরাং সামাজিক নিয়ন্ত্রণ ছাড়া কোন সমাজই পূর্ণাঙ্গতা লাভ করতে পারে না। আর সে কারণেই সামাজিক নিয়ন্ত্রণের বাহন গুলোর ভূমিকা অপরিসীম।
1 comment
[…] সামাজিক নিয়ন্ত্রণের বাহন সমূহ আলোচন… […]
Comments are closed.