সকল লেনদেন ঘটনা; কিন্তু সকল ঘটনা লেনদেন নয়। অর্থাৎ ঘটনা লেনদেন এর পূর্বশর্তস্বরূপ গণ্য হয়। তাই লেনদেন হতে হলে তা ঘটনা হবেই কিন্তু সকল প্রকার ঘটনা লেনদেন হবে না। অর্থের মাপকাঠিতে পরিমাপযোগ্য দ্রব্যসামগ্রী ও সেবা কর্মের আদান-প্রদানের ফলে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক পরিবর্তনকারী ঘটনাই লেনদেন। কোনো ঘটনা লেনদেন হতে হলে নিজের বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্য হতে এক বা একাধিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকা দরকার। যেমন-
(i) আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন
(ii) অর্থের দ্বারা পরিমাপযোগ্য,
(iii) দ্বৈতসত্তা,
(iv) স্বয়ংসম্পূর্ণ ও স্বতন্ত্র,
(v) অদৃশ্যমান,
(vi) ইতিবৃত্ত ঘটনা ও
(vii) হিসাবরক্ষণের ভিত্তি ইত্যাদি।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় নগদ মূল্যে ৫০০০/= টাকার পণ্য বিক্রয় করা হলো। এটা একটি লেনদেন। কারণ এটাতে লেনদেনের বৈশিষ্ট্যসমূহ বিদ্যমান।
পক্ষান্তরে যে ঘটনা আর্থিকমূল্যে পরিমাপ করা যায় না এবং কারবারের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটে না। এমন ঘটনাকে লেনদেন বলা হয় না। যেমন- একজন কর্মচারীর ব্যক্তিগত ৫০০/= টাকা হারিয়ে গেল। এটি একটি ঘটনা, কিন্তু লেনদেনের বৈশিষ্ট। অনুপস্থিত থাকায় ঘটনাটি লেনদেন নয়।
পরিশেষে বলা যায়, প্রতিটি ঘটনা লেনদেন নয়। কিন্তু প্রত্যেকটি লেনদেন ঘটনা।
লেনদেন কত প্রকার ও কি কি? |
লেনদেনের বৈশিষ্ট্য সমূহ আলোচনা কর |
ভাউচার কাকে বলে?
ভাউচার শব্দটির অর্থ হলো প্রমাণ হিসেবে কাজ করে এমন লিখিত দলিল। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে সংঘটিত নগদ লেনদেনগুলো অর্থাৎ ক্রয়, বিক্রয়, বিভিন্ন প্রকার খরচ ও আয় ইত্যাদি হিসাবের বইয়ে লিপিবদ্ধ করার জন্য যে লিখিত প্রমাণপত্র বা দলিল ব্যবহার করা হয়, তাকে ভাউচার বলে।
ভাউচার কত প্রকার ও কি কি?
ভাউচার দুই প্রকার। যথা-
১. ডেবিট ভাউচার
পণ্য ক্রয় ও বিভিন্ন প্রকার ব্যয়ের জন্য যে ভাউচার ব্যবহৃত হয় তাকে ডেবিট ভাউচার বলা হয়। ডেবিট ভাউচারের সাথে চলান, বিল বা ক্যাশ মেমো যুক্ত করে তাতে ধারাবাহিকভাবে ভাউচার নম্বর প্রদানপূর্বক ক্যাশ বুকের ক্রেডিট দিকে লিপিবদ্ধ করা হয়। ভাউচার নম্বর ক্যাশ বুকের নির্দিষ্ট কলামে উল্লেখ করা হয় যাতে ভবিষ্যতে প্রয়োজনে ভাউচারটি সহজে খুঁজে পাওয়া যায়।
২. ক্রেডিট ভাউচার
পণ্য বিক্রয় ও আয়ে জন্য যে ভাউচার ব্যবহৃত হয়, তাকে ক্রেডিট ভাউচার বলা হয়। ক্রেডিট ভাউচারের সাথে চালানের কপি ও ক্যাশ মেমো বা প্রাপ্তি রশিদ সংযুক্ত করে তাতে প্রয়োজনীয় ক্রেডিট ভাউচার নম্বর প্রদান করত ক্যাশ বুকে ডেবিট দিকে লেখা হয়। ক্রেডিট ভাউচার নম্বর ক্যাশ বুকের ডেবিট দিকে নির্দিষ্ট কলামে লেখা থাকে যাতে ভবিষ্যতে ক্রেডিট ভাউচারটি সহজে খুঁজে বের করা যায়।
ডেবিট নোট বা দেনা চিঠা কাকে বলে?
ক্রয়কৃত মাল ক্রেতা যখন কোনো কারণবশত বিক্রেতার নিকট ফেরত পাঠায় তখন ক্রেতা উক্ত মালের পূর্ণ বিবরণ যথা- মালের পরিমাণ, দর, মূল্য, ফেরতের কারণ ইত্যাদির বর্ণনা একখানা কাগজে লিখে ফেরতকৃত মালের সাথে বিক্রেতার নিকট প্রেরণ করে এবং বিক্রেতাকে জানিয়ে দেয় যে, তাদের হিসাবখাত উক্ত মাল বাবদ ডেবিট করা হয়েছে। একে ডেবিট নোট বলে। ডেবিট নোটের সাহায্যে ক্রয় ফেরত বই লেখা হয়।
ক্রেডিট নোট বা পাওনা চিঠা কাকে বলে?
ধারে বিক্রয়কৃত পণ্য কোনো কারণে বিক্রেতার নিকট ফেরত আসলে বিক্রেতা উক্ত পণ্যের পূর্ণ বিবরণ যথা- মালের পরিমাণ, দর, মূল্য, ফেরতের কারণ ইত্যাদি একখানা কাগজে লিখে ক্রেতার নিকট পাঠিয়ে দেয় এবং ক্রেতাকে জানিয়ে দেয় যে, তার হিসাবকে উক্ত মালের মূল্য বাবদ ক্রেডিট করা হয়েছে। একে ক্রেডিট নোট বলে। ক্রেডিট নোটের সাহায্যে বিক্রয় বই লেখা হয়।