রেওয়ামিলে কি কি আসে না বা কোন কোন ভুল রেওয়ামিলে ধরা পড়ে না তা অনেকেই জানতে চান। আজকের আর্টিকেলে এ সম্পর্কে আলোচনা করবো। সেই সাথে কোন কোন ভুল রেওয়ামিলে ধরা পড়ে সেগুলো সম্পর্কেও আলোচনা করবো।
কোন কোন ভুল রেওয়ামিলে ধরা পড়ে না
রেওয়ামিলের দুদিক মিলে যাওয়ার পরও বিশেষ ধরনের কতগুলো ভুল থেকে যেতে পারে। এরূপ ভুল সাধারণত দু প্রকার। যথা-
(১) করণিক ভুল বা হিসাব লেখার ভুল।
(২) নীতিগত ভুল।
রেওয়ামিল কাকে বলে? রেওয়ামিল করার নিয়ম বা প্রস্তুত প্রণালি |
১. করণিক ভুল
হিসাবরক্ষকের অসাবধানতার কারণে সাধারণত যে সকল ভুল হয়ে থাকে তাকে করণিক ভুল বলে। করণিক ভুল আবার চার প্রকার। যথা-
(i) বাদ পড়ার ভুল
কোনো লেনদেন ভুলে কোনো প্রাথমিক হিসাবের বইতে লেখা না হলে খতিয়ানের কোনো হিসাবেই তা লিপিবন্ধ করা হয় না। ডেবিট দিকেও না আবার ক্রেডিট দিকেও নয়। এই জাতীয় ভুলকে বাদ পড়ার ভুল বলে। এই জাতীয় ভুল হলেও রেওয়ামিলের উভয় পার্শ্ব মিলে যাবে কিন্তু হিসাবে ভুল থেকে যাবে।
(ii) লেখার ভুল
লেনদেন ভাউচার হতে হিসাবের প্রাথমিক বইতে লেখার সময় প্রকৃত টাকা হতে কম বা বেশি লেখা হলে বা জাবেদা হতে খতিয়ানস্থিত হিসাবে লেখার সময় ভুল অংক লিখলে বা জাবেদা হতে খতিয়ানস্থিত হিসাবে লেখার সময় ডেবিট টাকাকে ক্রেডিট করলে বা ক্রেডিট টাকাকে ডেবিটে লেখলে বা একই লেনদেনকে একাধিকবার লেখা হলে যে ভুলের জন্ম হয় তাকে লেখার ভুল বলে। এরূপ ভুল থাকলেও রেওয়ামিলের উভয় পার্শ্ব মিলে যাবে।
(iii) বেদাখিলার ভুল
জাবেদা হতে খতিয়ানস্থিত হিসাবে তোলার সময় একটি হিসাবের পরিবর্তে অন্য হিসাবের সঠিক পার্শ্বে টাকার অংক তোলা হলে যে ভুল হয় তাকে বেদাখিলার ভুল বলে। এ প্রকার ভুলের ফলেও রেওয়ামিল মিলে যাবে।
(iv) পরিপূরক ভুল
যখন ডেবিট দিকের এক বা একাধিক ভুলের পরিমাণ ক্রেডিট দিকের এক বা একাধিক ভুলের পরিমাণের সমান হয় তখন তাকে পরিপূরক ভুল বলে। পরিপূরক ভুলের ফলেও ব্রেওয়ামিলের উভয় পার্শ্ব-সমান হবে।
২. নীতিগত ভুল
হিসাবরক্ষণের স্বীকৃত নীতিকে লঙ্ঘন করলে যে ভুলের সৃষ্টি হয় তাকে নীতিগত ভুল বলে। হিসাববিজ্ঞানের মূলনীতি হলো কারবারি লেনদেনগুলোকে মূলধন এবং মুনাফাজাতীয় আয়-ব্যয় হিসাবে চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট হিসাবে লেখা। কোনো কোনো সময় হিসাবরক্ষক মূলধনজাতীয় ব্যয়কে মুনাফাজাতীয় ব্যয় হিসাবে লিপিবন্ধ-করে। ফলে রেওয়ামিল মিলে যায়।
কোন কোন ভুল রেওয়ামিলে ধরা পড়ে
যেসব কারণে রেওয়ামিলের দু’পার্শ্ব সমান হয় না বা মিলে না সেসব কারণগুলো মূলত করণিক ভুল নামে পরিচিত। এই ভুলগুলো সাধারণত তিন প্রকার। যথা-
১. জাবেদা হতে খতিয়ানে লেখার ভুল।
২. হিসাবখাতের উদ্বৃত্ত নির্ণয়ের ভুল ও
৩. রেওয়ামিল প্রস্তুতের ভুল।
১ . জাবেদা হতে খতিয়ানে লেখার ভুল
(i) খতিয়ানের একটি হিসাবের সঠিক দিকে টাকার পরিমাণ ঠিক লেখা হয়েছে কিন্তু অন্য দিকের হিসাবে মোটেও লেখা হয় নি।
(ii) খতিয়ানের একটি দিকে টাকার অংক ভুল লেখা হয়েছে।
(iii) খতিয়ানের একটি দিক ডেবিট ও ক্রেডিট না করে দুটি হিসাবকে ডেবিট বা ক্রেডিট করা হলে।
(iv) প্রাথমিক হিসাবের বইতে যোগফলে ভুল থাকলে। (v) হিসাবের ভুল দিকে টাকার পরিমাণ লেখা হলে।
জাবেদা ও খতিয়ানের মধ্যে পার্থক্য দেখাও |
২. হিসাবখাতের উদ্বৃত্ত নির্ণয়ে ভুল
(i) কোনো হিসাবখাতের কোনো দিকের যোগফল ভুল হতে পারে।
(ii) কোনো হিসাবখাতের উদ্বৃত্ত নির্ণয়ে ভুল হলে।
৩. রেওয়ামিল প্রস্তুতের ভুল
(i) খতিয়ানের কোনো হিসাব খাতের ডেবিট উদ্বৃত্ত রেওয়ামিলে ক্রেডিট দিকে বা ক্রেডিট উদ্বৃত্ত ডেবিট দিকে লেখা।
(ii) খতিয়ানের কোনো হিসাবের উদ্বৃত্ত রেওয়ামিলে লেখার সময় ভুল হলে।
(iii) খতিয়ানের কোনো হিসাবের উদ্বৃত্ত রেওয়ামিলে লেখার সময় সম্পূর্ণভাবে বাদ পড়লে।
(iv) রেওয়ামিলের যোগফল নির্ণয়ের সময় ভুল হলে।