একটি দেশের অর্থনীতিতে মোট জাতীয় উৎপাদন ও মোট দেশজ উৎপাদন উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে দুটি ধারণাই প্রায় কাছাকাছি হলেও এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। নিচে তা তুলে ধরা হলো-
১. সংজ্ঞাগত পার্থক্য: কোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত এক বছরে কোনো দেশের সকল দ্রব্যসামগ্রী ও সেবাকর্মের সমষ্টিকে মোট জাতীয় উৎপাদন বা GNP বলে। অপরদিকে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে সাধারণত এক বছরে একটি দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত সকল দ্রব্যসামগ্রী ও সেবাকর্মের আর্থিক মূল্যকে মোট দেশজ উৎপাদন বা GDP বলা হয়।
২. প্রবাসীদের আয়: GNP-তে দেশীয় নাগরিক যারা প্রবাসে থাকে তাদের আয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পক্ষান্তরে, GDP-তে প্রবাসী নাগরিকদের আয় অন্তর্ভুক্ত করা হয় না।
৩. দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের আয়: GNP-তে দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের উৎপাদন ও আয় অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। অথচ GDP-তে দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের মূলধন ও বিনিয়োগজনিত অবদান অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
৪. আওতা ও পরিধি: GNP-এর আওতা ও পরিধি বিস্তৃত। অপরপক্ষে, GDP-এর পরিধি সংক্ষিপ্ত।
৫. আমদানি ও রপ্তানি: GNP-তে আমদানি ও রপ্তানি (X M) যোগ করা হয়। অপরদিকে, GDP-তে আমদানি ও রপ্তানির হিসাব অন্তর্ভুক্ত হয় না।
৬. অর্থনৈতিক তাৎপর্য: অর্থনৈতিক তাৎপর্যের দিক বিবেচনায় GNP-এর গুরুত্ব কম। পক্ষান্তরে, অর্থনৈতিক তাৎপর্যের দিকে একটি দেশের জন্য GDP গুরুত্বপূর্ণ।
পরিশেষে বলা যায়, GNP ও GDP-এর মধ্যে পার্থক্য থাকলেও আমদানি ও রপ্তানি শূন্য হলে অর্থাৎ X = M হলে GNP = GDP সমান হবে।
মোট দেশজ উৎপাদন কাকে বলে | মোট জাতীয় উৎপাদন কাকে বলে |
জাতীয় আয় কি | জাতীয় আয় কাকে বলে |